Sep 25, 2012

সালাত আদায়ের পদ্ধতি



 ড. সায়িদ ইব্‌ন আলি ইব্‌ন ওহাফ আল-কাহতানি 

অনুবাদ : সানাউল্লাহ নজির আহমদ

সম্পাদনা : ড. মো: আব্দুল কাদের

ভূমিকা

নিশ্চয় সকল প্রশংসার মালিক আল্লাহ তাআলাআমরা তার প্রশংসা করিতার নিকট সাহায্য চাইতার নিকট ইস্তেগফার করি। আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্ট ও কুকর্মের বদ আছর থেকে তার নিকট চাই। তিনি যাকে হিদায়াত করেনতাকে কেউ গোমরাহ করতে পারে নাআর যাকে তিনি গোমরাহ করেনতাকে কেউ সুপথ দেখাতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যেআল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেইতিনি এক-তার কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যেমুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তার উপর এবং তার বংশধর ও সাহাবাদের উপর এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা তাদের সুন্দরভাবে অনুসরণ করবেতাদের সকলের উপর অসংখ্য-অগনন দরুদ ও সালাম বর্ষণ করুন।
অতঃপর: সিফাতুস সালাত’ তথা সালাতের নিয়ম-পদ্ধতি সংক্রান্ত এটা একটা ছোট পুস্তিকাএতে আমি তাকবির থেকে আরম্ভ করে সালাম পর্যন্ত কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিকোন থেকে সালাতের নিয়ম-পদ্ধতি বর্ণনা করেছি। এ পুস্তিকা লেখার ক্ষেত্রে আমি আমাদের শায়খ আল্লামা আব্দুল আজিজ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইব্‌ন বাজ এর দরস ও তাকরির থেকে অনেক উপকৃত হয়েছি। আল্লাহ তাকে জান্নাতে সুউচ্চ স্থান দান করুন।
দোয়া করছি আল্লাহ আমাদের এ ক্ষুদ্র আমলকে বরকতময় করুন এবং একে একমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্য কবুল করুন। এর দ্বারা আমাকে উপকৃত করুন জীবনে ও মরণে এবং প্রত্যেক পাঠককে। তিনি দোয়া কবুলকারী ও মনোবাঞ্চনা পূর্ণকারী।

লেখক
শুক্রবারের প্রথম প্রহর
১৮/০৮/১৪২০হি.



সালাত আদায়ের পদ্ধতি

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে সালাত আদায় করেছেন ঠিক সেভাবে সালাত করাই সালাতের বিশুদ্ধ পদ্ধতি মালেক ইব্‌ন হুয়াইরিস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
... صلوا كما رأيتموني أصلي.
তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখসেভাবে সালাত আদায় কর[1] তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ন্যায় যে সালাত আদায় করতে চায়তার উচিত এ পুস্তকে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে সালাত আদায় করা:

১. পরিপূর্ণরূপে অযু করাযেরূপ আল্লাহ তাআলা তার বাণীতে নির্দেশ দিয়েছেন:
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا قُمۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغۡسِلُواْ وُجُوهَكُمۡ وَأَيۡدِيَكُمۡ إِلَى ٱلۡمَرَافِقِ وَٱمۡسَحُواْ بِرُءُوسِكُمۡ وَأَرۡجُلَكُمۡ إِلَى ٱلۡكَعۡبَيۡنِۚ وَإِن كُنتُمۡ جُنُبٗا فَٱطَّهَّرُواْۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰٓ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَآءَ أَحَدٞ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَآئِطِ أَوۡ لَٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدٗا طَيِّبٗا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَيۡدِيكُم مِّنۡهُۚ مَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيَجۡعَلَ عَلَيۡكُم مِّنۡ حَرَجٖ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمۡ وَلِيُتِمَّ نِعۡمَتَهُۥ عَلَيۡكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ٦﴾ [سورة المائدة: 6]
হে মুমিগণযখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাওতখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত করমাথা মাসেহ কর এবং টাকনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাকতবে ভালোভাবে পবিত্র হও। আর যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর অতঃপর পানি না পাওতবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত দ্বারা মাসেহ কর। আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান নাবরং তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে এবং তার নিআমত তোমাদের উপর পূর্ণ করতেযাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর[2]
আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেননবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لا تقبل صلاة بغير طهور، ولا صدقة من غلول»
পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কুবল করা হয় নাএবং খিয়ানতের সদকাও কবুল করা হয় না[3] অতএবসালাত আরম্ভ করার পূর্বে প্রত্যেক মুসলিমের অবশ্য জরুরি পরিপূর্ণরূপে পবিত্রতা অর্জন করা।

২. কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানোঅর্থাৎ মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ঘর সম্মুখে রেখে দাঁড়াবে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِي ٱلسَّمَآءِۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبۡلَةٗ تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَيۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ ١٤٤﴾[البقرة:144]
আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাবযা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাকতার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছেতারা অবশ্যই জানে যেতা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করেসে ব্যাপারে আল্লাহ গাফিল নন[4]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতভুল নিয়মে সালাত আদায়কারীর ঘটনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«إذا قمت إلى الصلاة فأسبغ الوضوء ثم استقبل القبلة...».
যখন তুমি সালাতের জন্য দণ্ডায়মান হওপরিপূর্ণরূপে অযু কর অতঃপর কিবলা মুখী হও...[5]

৩. সালাত আদায়কারী ইমাম বা মুনফারেদ যেই হোকসামনে সুতরা রেখে দাঁড়াবে। সুবরা ইব্‌ন মা‍বাদ জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«ليستترْ أحدُكم في الصلاة ولو بسهمٍ»
তীর বা বর্শা দিয়ে হলেও তোমাদের প্রত্যেকে যেন সালাতে সুতরা কায়েম করে[6] আবু জর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إذا قام أحدُكم يصلي فإنه يستره إذا كان بين يديه مثل مؤخرة الرَّحل،فإذا لم يكن بين يديه مثل مؤخرة الرحل فإنه يقطع صلاته: الحمار، والمرأة، والكلب الأسود».
যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায়ের জন্য দণ্ডায়মান হয়তখন তার সামনে উটের উপর আরোহী ব্যক্তির হেলান দেয়ার জন্য পিছনে রাখা ঠিকার ন্যায় কোন কিছু সুতরা হিসেবে রাখাই যথেষ্টকারণ যদি অনুরূপ ঠিকা না থাকেতাহলে তার সালাত গাধানারী ও কালো কুকুর ভঙ্গ করে দিতে পারে[7] সুতরার কাছাকাছি দাঁড়াবে ও তার নিকটবর্তী হয়ে সালাত আদায় করবে। আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«إذا صلى أحدُكم فليصلِّ إلى سترةٍ، وليدنُ منها».
তোমাদের কেউ যখন সালাত আদায় করেসে যেন সুতরার দিকে ফিরে সালাত আদায় করে ও তার নিকটবর্তী হয়[8] সুতরা ও তার মাঝখানে একটি বকরি অতিক্রম করার জায়গা ফাঁকা রাখবেঅথবা সেজদার জায়গা পরিমাণ খালি রাখবে। তিন হাতের অতিরিক্ত ফাঁকা রাখবে না। অনুরূপ দুই কাতারের মাঝেও এর বেশী ফাঁকা রাখবে না। সাহাল ইব্‌ন সাদ সায়েদি বর্ণনা করেন:
«كان بين مصلى رسول الله  وبين الجدار ممر الشاة».
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের জায়গা ও দেয়ালের মাঝে একটি বকরি অতিক্রম করার পরিমাণ জায়গা ফাঁকা ছিল[9] যদি কেউ তার সামনে থেকে অতিক্রম করতে চায়তাকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করবেসে বিরত না হলে শক্তি দ্বারা তাকে প্রতিহত করবে। আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শোনেছি:
«إذا صلى أحدكم إلى شيء يستره من الناس، فأراد أحد أن يجتاز بين يديه فليدفعْه، فإن أبى فليقاتلْه؛ فإنما هو شيطان».
কোন ব্যক্তি যখন সুতরাং নিয়ে সালাত আদায় করেযে তাকে মানুষ থেকে আড়াল করে রাখেঅতঃপর কেউ যদি তার সামনে থেকে যেতে চায়সে তাকে প্রতিহত করবেসে বিরত না হলে তার সাথে যুদ্ধ করবে। কারণ সে শয়তান[10] মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে, “কারণ তার সাথে শয়তান রয়েছে[11]
মুসল্লির সামনে দিয়ে যাওয়া বৈধ নয়। আবু জুহাইম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لو يعلمُ المارُّ بين يدي المصلي ماذا عليه لكان أن يقف أربعين خيرًا له من أن يمرَّ بين يديه»
মুসল্লির সামনে থেকে অতিক্রকারী ব্যক্তি যদি জানততার উপর কি পরিমাণ পাপ হচ্ছেতাহলে সামনে দিয়ে যাওয়ার চেয়ে চল্লিশ পর্যন্ত অপেক্ষা করা তার জন্য উত্তম ছিল। এ হাদিসের একজন বর্ণনাকারী আবু নাদর বলেন: আমার মনে নেই তিনি কি বলেছেন: চল্লিশ দিনঅথবা চল্লিশ মাস অথবা চল্লিশ বছর[12]
ইমামের সুতরাং তার পিছনে অবস্থানরত সকলের সুতরাং হিসেবে যথেষ্ট আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাসের হাদিসে রয়েছেতিনি একটি মাদী গাধার পিঠে চড়ে আগমন করেনতখন সবেমাত্র তিনি সাবালক হয়েছেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজে মিনায় দাঁড়িয়ে দেয়াল ব্যতীত মানুষদের নিয়ে সালাত আদায় করতে ছিলেনইব্‌ন আব্বাস প্রথম কাতারের কতক মুসল্লির সামনে দিয়ে গাধার পিঠে আরোহণ অবস্থায় অতিক্রম করেনঅতঃপর গাধার পিঠ থেকে নেমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে অন্যদের সাথে কাতারে শামিল হয়ে সালাত আদায় করেন। তার এ আচরণকে কেউ তিরষ্কার বা অপছন্দ করেনি[13] আমি আমাদের শায়খ ইব্‌ন বায রাহিমাহুল্লাহুকে বলতে শোনেছি:এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যেইমামের সুতরাং মুক্তাতিদের সুতরাং হিসেবে গণ্যঅতএব ইমামের সামনে সুতরাং থাকলে মুক্তাতিদের সামনে দিয়ে অতিক্রম করা দোষণীয় নয়[14]

৪. দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবিরে তাহরিমা বলা মুসল্লি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যে নফল অথবা ফরয সালাত আদায়ের ইচ্ছা করেছেঅন্তরে তার নিয়ত করবে ও মুখে الله أكبر আল্লাহু আকবার” বলবেএবং সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রেখে হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে উভয় হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে। কারণ ভুল পদ্ধতিতে সালাত আদায়কারীর হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «إذا قمت إلى الصلاة فكبر»
যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াওতাকবির বল[15] আল্লাহ তাআলা বলেন: ﴿وَقُومُواْ لِلَّهِ قَٰنِتِينَ ٢٣٨﴾[البقرة:238 ] এবং আল্লাহর জন্য দাঁড়াও বিনীত হয়ে[16]
ইমরান ইব্‌ন হাসিন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
 « صلِّ قائمًا، فإن لم تستطعْ فقاعداً، فإن لم تستطع فعلى جَنْبٍ»
দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করযদি না পাড় তবে বসে সালাত আদায় করযদি না পাড় তবে কাত শুয়ে সালাত আদায় কর[17] ওমর ইব্‌ন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «إنما الأعمال بالنيات» নিশ্চয় নিয়তের উপর আমল নির্ভরশীল[18]
নিয়ত মুখে উচ্চারণ করবে নাকারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরাম নিয়ত মুখে উচ্চারণ করেননি। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনসালাত আরম্ভ করার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠাতেনযখন তিনি রুকুর জন্য তাকবির বলতেন ও রুকু থেকে মাথা উঠাতেন অনুরূপ হাত উঠাতেনতবে সেজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তিনি অনুরূপ করতেন না। অন্য বর্ণনায় আছে:
« وإذا قام من الركعتين رفع يديه»
যখন তিনি দুরাকাত পূর্ণ করে উঠতেনউভয় হাত উঠাতেন[19]
মালিক ইব্ হুয়াইরিস রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসে রয়েছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকবির বলতেনতখন তিনি উভয় কান বরাবর হাত উঠাতেনযখন তিনি রুকু করতেন তখনও তিনি উভয় কান বরারব হাত উঠাতেনরুকু থেকে মাথা উঠিয়ে তিনি বলতেন«سمع الله لمن حمده মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে«حتى يحاذي بهما فروع أذنيه তিনি উভয় হাত দু’ কানের লতি বরাবর করেছেন[20]
কখন উভয় হাত কান বা কাঁধ পর্যন্ত উঠানো হবে এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিসগুলো তিন প্রকার:
প্রথম প্রকার: এ প্রকার হাদিস দ্বারা বুঝা যায়রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগে হাত উঠিয়ে তাকবির বলেছেন। ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
«كان رسول الله  إذا قام للصلاة رفع يديه حتى تكونا حذو منكبيه، ثم كبر»
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেনউভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাতেন অতঃপর তাকবির বলতেন[21] আবু হুমাইদ সায়েদি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
«كان رسول الله ﷺ إذا قام إلى الصلاة يرفع يديه حتى يُحاذيَ بهما منكبيه ثم يُكبِّر»
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেনতখন তিনি উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেনঅতঃপর তাকবির বলতেন[22]
দ্বিতীয় প্রকার: এ প্রকারের হাদিস দ্বারা বুঝা যায়রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবির বলার পর হাত উঠাতেন। আবু কালাবা থেকে বর্ণিততিনি মালেক ইব্‌ন হুয়াইরিসকে দেখেছেনতিনি সালাত আদায়ের সময় তাকবির বলে অতঃপর উভয় হাত উঠাতেন... তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ করতেন[23]
তৃতীয় প্রকার: এ প্রকারের হাদিস দ্বারা বুঝা যায়তিনি তাকবিরের সাথে হাত উঠিয়েছেনতাকবির শেষ হাত উঠানোও শেষ। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাতে তাকবির আরম্ভ করতে দেখেছিতিনি তাকবির বলার সময় উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়েছেন[24]
অতএব যে ব্যক্তি এসব পদ্ধতির যে কোন একটির অনুসরণ করলসে সুন্নতের উপর আমল করল।[25]
আর সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রাখামাথা ঝুকিয়ে রাখা ও যমীনে দৃষ্টি নিক্ষেপ করার প্রমাণ হচ্ছে বায়হাকি ও হাকেম বর্ণিত হাদিসযার স্বপক্ষে রাসূলের দশজন সাহাবি থেকে বর্ণিত হাদিস রয়েছে।[26]
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لينتهين أقوام يرفعون أبصارهم إلى السماء في صلاتهم، أو لتُخْطَفَنَّ أبصارُهم».
যারা তাদের সালাতে আসমানের দিকে দৃষ্টি উঠায়তারা অবশ্যই বিরত থাকবেঅথব তাদের দৃষ্টি হরণ করা হবে[27]

৫. উভয় হাত নিচে নামিয়ে বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের পিঠ-কব্জি-বাহুর উপর রাখা ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করেছিতিনি বুকের উপর বাম হাতের উপরে ডান হাত রেখেছেন[28] এ হাদিস রুকু থেকে উঠার পর দাঁড়ানো অবস্থাকেও শামিল করে। কারণ ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসের অপর শব্দে বর্ণিত আছে যেতিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি: যখন তিনি সালাতে দণ্ডায়মান থাকতেনডান হাত দ্বারা বাম হাত পাকড়াও করতেন[29] এ হাদিসে ডান হাত দ্বারা বাম হাত পাকড়াও করা রয়েছে অন্যান্য হাদিসে বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা রয়েছে। ইব্‌ন উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ বলেন: এ দু’ অবস্থায় বৈধ: প্রথমত ডান হাত দ্বারা বাম হাত পাকড়াও করা দ্বিতীয়ত ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা[30] সাহাল ইব্‌ন সাদ থেকে বর্ণিততিনি বলেন: মানুষদেরকে বলা হতপুরুষ যেন সালাতে তার ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখে আবু হাযেম বলেন: এখান থেকে আমি নিশ্চিত যেএটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ ছিল[31] আল্লামা ইব্‌ন বাজ রাহিমাহুল্লাহকে বলতে শোনেছি: হতে পারে এটা আরেক প্রকারআবার হতে পারে এর উদ্দেশ্য ওয়ায়েলের হাদিস অনুরূপ[32]

৬. সালাত শুরু করার দোয়া দ্বারা সালাত আরম্ভ করা সালাত শুরু করার অনেক দোয়া রয়েছেসেখান থেকে যে কোন একটি দোয়া পড়াতবে একাধিক দোয়া একসাথে না পড়াবরং এক এক সময় এক এক দোয়া পড়া সালাত আরম্ভ করার কতক দো‘আ:
এক. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবির বলে কিরাত আরম্ভ করার আগে কিছু সময় চুপ থাকতেন। আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর উৎসর্গ! আপনি তাকবির ও কিরাতের মধ্যবর্তী সময়ে চুপ থেকে কি বলেনতিনি বললেন: আমি বলি:
اللهم باعِدْ بيني وبين خَطايايَ كما باعَدْتَ بين المشرق والمغرب، اللهم نَقِّني من خَطايايَ كما يُنقَّى الثوبُ الأبيضُ من الدَّنس، اللهم اغْسلْني من خَطايايَ بالثلج والماء والبَرَدِ».
হে আল্লাহ তুমি আমার ও আমার পাপের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করযেমন দূরত্ব সৃষ্টি করে দিয়েছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ তুমি আমাকে আমার পাপ থেকে পবিত্র করযেমন পবিত্র করা হয় সাদা কাপড় ময়লা থেকে। হে আল্লাহ আমাকে আমার পাপ থেকে ধৌত কর বরফপানি ও ডাণ্ডা দ্বারা[33]
দুই. সালাত আদায়কারী ইচ্ছা করলে নিম্নের দোয়াও পড়তে পারে:
«سبحانك اللهم وبحمدك، وتبارك اسمك، وتعالى جدُّك، ولا إلهَ غيرُك» .
হে আল্লাহ তোমার পবিত্রতা ও প্রশংসার মাধ্যমে তোমার তাসবিহ পাঠ করছিতোমার নাম বরকতময়তোমার সম্মান সুমহানতুমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই[34]
তিন. সালাত আদায়কারী ইচ্ছা করলে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত দোয়াও পড়তে পারেআলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেনবলতেন:
«وجهت وجهي للذي فطر السموات والأرض حنيفًا مسلمًا وما أنا من المشركين، إن صلاتي ونُسُكي، ومحياي، ومماتي لله رب العالمين، لا شريك له وبذلك أمرت وأنا من المسلمين، اللهم أنت الملك لا إله إلا أنت، أنت ربي وأنا عبدك، ظلمت نفسي واعترفت بذنبي فاغفر لي ذنوبي جميعًا، إنه لا يغفر الذنوب إلا أنت، واهدني لأحسن الأخلاق لا يهدي لأحسنها إلا أنت، واصرف عني سيئها لا يصرف عني سيئها إلا أنت، لبيك، وسعديك، والخير كله بيديك، والشر ليس إليك، أنا بك وإليك، تباركت وتعاليت، أستغفرك وأتوب إليك».
আমি একনিষ্ঠভাবে আত্মসমর্পণ করলাম মহান আল্লাহর পানেযিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেনআমি মুশিরিকদের অন্তর্ভুক্ত নয়। নিশ্চয় আমার সালাতআমার কুরবানিআমার জীবন ও আমার মরণ একমাত্র দুজাহানের পালনকর্তা আল্লাহ তাআলার জন্য নিবেদিততার কোন শরিক নেইআমাকে এরই নির্দেশ দেয়া হয়েছেআমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। হে আল্লাহ তুমিই মালিকতুমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেইতুমি আমার রবআমি তোমার বান্দাআমি আমার নফসের উপর যুলম করেছিআমি আমার অপরাধ স্বীকার করছিঅতএবআমার সকল পাপ মোচন কর নিশ্চয় তুমি ব্যতীত কেউ পাপ মোচন করতে সক্ষম নয়। আমাকে উত্তম আদর্শের দীক্ষা দান করযার দীক্ষা একমাত্র তুমি ব্যতীত কেউ দিতে সক্ষম নয়। তুমি আমার নিকট থেকে বদ আখলাক দূরীভূত করতুমি ব্যতীত কেউ তা দূরীভূত করতে সক্ষম নয়। আমি তোমার দরবারে হাজিরতুমি কল্যাণময়সকল কল্যাণ তোমার হাতেঅকল্যাণ তোমার পক্ষ থেকে নয়আমি তোমার উপর সোপর্দ এবং তোমার নিকটই প্রত্যাবর্তন করব। তুমি বরকতময় ও মহান। আমি তোমার নিকট ইস্তেগফার করছি এবং তোমার নিকটই তাওবা করছি[35] সালাত আদায়কারী এ ছাড়া আরো অন্যান্য দোয়া পড়তে পারেনযা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।[36]
৭. অতঃপর সালাত আদায়কারী বলবে: «أعوذ بالله من الشيطان الرجيم» কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿َإِذَا قَرَأۡتَ ٱلۡقُرۡءَانَ فَٱسۡتَعِذۡ بِٱللَّهِ مِنَ ٱلشَّيۡطَٰنِ ٱلرَّجِيمِ ٩٨﴾[النحل:98 ]
সুতরাং যখন তুমি কুরআন পড়বে আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান হতে পানাহ চাও[37] অথবা বলবে:
«أعوذ بالله السميع العليم من الشيطان الرجيم، من همزه، ونفخه، ونفثه».
আল্লাহর নিকট বিতাড়িত শয়তান থেকে পানাহ চাইতার আছর থেকেতার অহঙ্কার থেকে ও তার খারাপ অনুভূতি থেকে[38]

আস্তে بسم الله الرحمن الرحيم বলা। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামআবুবকরওমর  উসমানের পিছনে সালাত আদায় করেছিতাদের কেউ বিসমিল্লাহ জোরে বলেননি[39] বিসমিল্লাহ একটি সম্পূর্ণ আয়াত।[40]

৯. সূরা ফাতেহা তিলাওয়াত করা:
﴿ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ١ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ٢ مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ٣ إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ٤ هۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ٥ صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ٦ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ ٧﴾[الفاتحة:1-7 ]
কারণউবাদা ইব্‌ন সাবেদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لا صلاة لمن لم يقرأ بفاتحة الكتاب».
যে ফাতেহা পড়ল নাতার কোন সালাত নেই[41]
প্রত্যেক মুসল্লির সূরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিবজেহরি বা সিররি উভয় সালাতের মুক্তাদিগণ এ নিদের্শের অন্তর্ভুক্ত। কারণ উবাদা থেকে বর্ণিত পূর্বের মারফূ হাদিসে রয়েছে:
«لعلكم تقرؤون خلف إمامكم»
হয়তো তোমরা ইমামের পিছনে তিলাওয়াত কর আমরা বললাম: হ্যাঁদ্রুত পড়ি হে আল্লাহর রাসূল। তিনি বললেন:
«لا تفعلوا إلا بفاتحة الكتاب؛ فإنه لا صلاةَ لمن لم يقرأْ بها».
ফাতেহা ব্যতীত অন্য কিছু পড় নাকারণ যে ফাতেহা পড়বে না তার কোন সালাত নেই[42]
মুহাম্মদ ইব্‌ন আবি আয়েশা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জনৈক সাহাবি থেকে বর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لعلكم تقرؤون والإمام يقرأ»؟
খুব সম্ভব ইমামের তিলাওয়াত করার সময় তোমরাও তিলাওয়াত কর তারা বলল: আমরা এরূপ করি। তিনি বললেন:
«لا، إلا أن يقرأ أحدكم بفاتحة الكتاب»
এরূপ কর নাতবে তোমাদের কেউ ফাতেহা পড়লে ভিন্ন কথা[43]
তবে যে মসবুক ইমামকে রুকু অবস্থায় পায় তার থেকে ফাতেহা পড়ার আবশ্যকতা উঠে যাবে। কারণ আবু বকরার হাদিসে রয়েছেতিনি যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পৌছেনতখন তিনি রুকু অবস্থায় ছিলেনআবু বকরা কাতারে শামিল না হয়েই রুকু করেনএ ঘটনা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেতিনি বলেন: আল্লাহ তোমার আগ্রহ বাড়িয়ে দিনতবে এরূপ কখনো কর না[44] এখানে লক্ষ্য করছিসে যে রাকাতের রুকু পেয়েছেসে রাকাতের কিরাত তাকে কাজা করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেননিযদি কিরাতবিহীন সে রাকাত অশুদ্ধ হততবে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ তাকে পুনরায় তা আদায় করার নির্দেশ দিতেন।
মুক্তাদিরা যদি ভুলে যায় অথবা না জানেতাহলে তাদের থেকে সূরা ফাতেহা পড়ার আবশ্যকতা রহিত হয়ে যাবে।

১০. সূরা ফাতেহার শেষে বলবেآمين আমীন’ যদি জেহরি সালাত হয় জোরেআর সিররি সালাত হলে আস্তে বলব। আমীন’ এর অর্থ হচ্ছে: হে আল্লাহ কবুল কর। কারণ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেহা শেষ করে উচ্চ স্বরে আমীন বলতেন[45] তার থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ইমাম যখন আমীন বলেতোমরাও আমীন বলকারণ যার আমীন ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলে যাবেতার পূর্বের সকল পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে[46] তার থেকে আরো বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ইমাম যখন বলে﴿ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ  তোমরা বল آمين কারণ যার আমীন ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলে যাবেতার পূর্বের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে[47] যে ব্যক্তি সূরা ফাতেহা পড়তে অক্ষমসে কুরআনের অন্য কোথাও থেকে তিলাওয়াত করবে। যদি কুরআনের কিছুই না জানেতাহলে বলবে:
سبحان الله، والحمد لله، ولا إله إلا الله، والله أكبر، ولا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم».
কারণ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আবু আওফা থেকে বর্ণিততিনি বলেন: এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলে: আমি কুরআনের কোন অংশ গ্রহণ করতে সক্ষম নইঅতএব আমাকে তার পরিবর্তে অন্য কিছু শিক্ষা দিনতিনি বললেন: তুমি বল[48]:
سبحان الله، والحمد لله، ولا إله إلا الله، والله أكبر، ولا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم».

১১. সূরা ফাতেহার পর ফজর ও জুমার দুই রাকাতে এবং জোহরআসরমাগরিব ও এশার প্রথম দুই রাকাতে কোন একটি সূরা মিলানো অথবা কোরআনের যেখান থেকে সহজ তিলাওয়াত করা। আর নফলের প্রত্যেক রাকাতে সূরা মিলানো আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের প্রথম দুরাকাতে ফাতেহা পড়তেন ও তার সাথে দুটি সূরা মিলাতেন। প্রথম রাকাআত লম্বা করতেন এবং দ্বিতীয় রাকাআত ছোট করতেন। কখনো কখনো আয়াত শোনাতেন। আর আসরের প্রথম দুরাকাতে সূরা ফাতেহা ও দুটি সূরা মিলাতেনপ্রথম রাকাত তিনি লম্বা করতেন। ফজরের প্রথম রাকা‘ত লম্বা করতেনদ্বিতীয় রাকা‘ত ছোট করতেন[49] এ হাদিসটি এভাবেও বর্ণিত আছে যে, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহর ও আসরের প্রথম দুরাকাতে একটি করে সূরা মিলাতেনকখনো তিনি আমাদেরকে আয়াত শোনাতেন[50] বিশেষ করে জোহরের সালাত সম্পর্কে আছে যেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় দুরাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে অতিরিক্ত পড়েছেন। আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: আমরা জোহর ও আসরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামের পরিমাপ করতামআমরা অনুমান করলাম জোহরের দুরাকাতে তার দাঁড়ানোর পরিমাণ সূরা সাজদার অনুরূপদ্বিতীয় দুরাকাতের অনুমান করলাম তার অর্ধেক। আর আসরের প্রথম দুরাকাতের পরিমাপ করলাম তারও অর্ধেক অন্য শব্দে এরূপ এসেছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের প্রথম দুরাকাতে ত্রিশ আয়াত পর্যন্ত পড়তেনদ্বিতীয় দুরাকাতে পনের আয়াত পর্যন্ত পড়তেন, (প্রত্যেক রাকাতে)। অথবা বলেছেন: তার অর্ধেক। আর আসরের প্রথম দুরাকাতে পনের আয়াত পরিমাণ পড়তেনদ্বিতীয় দুরাকাতে তার অর্ধেক পড়তেন[51] এসব হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের দ্বিতীয় দুরাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে অতিরিক্ত পড়তেন।[52]
সুলাইমান ইব্‌ন ইয়াসার বলেনআবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু মদিনার জনৈক ইমামের দিকে ইশারা করে বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের সাথে তার সালাতের চেয়ে বেশী মিল কারো সালাতে দেখি না। সুলাইমান বলেন: আমি তার পিছনে সালাত আদায় করিসে জোহরের প্রথম দুরাকাত লম্বা করত ও দ্বিতীয় দুরাকাত ছোট করতঅনুরূপ আসরের সালাতও ছোট করতমাগরিবের প্রথম দুরাকাতে কিসারে মুফাস্‌সাল (মুফাস্‌সালের[53] ছোট সূরাসমূহ) এবং এশার প্রথম দুরাকাতে আওসাতে মুফাস্‌সাল (মুফাস্‌সালের মধ্যম সূরাসমূহ) পড়ত। সকালে পড়ত তিওয়ালে মুফাস্‌সাল (মুফাস্‌সালের বড় সূরাসমূহ)।[54] অনেক সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের সালাত পূর্বে বর্ণিত পরিমাণের চেয়ে অধিক লম্বা করতেন। আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: জোহরের সালাত এতটুকু লম্বা হত যেকেউ বাকিতে প্রয়োজন সারতে যেতঅতঃপর অযু করে ফিরে এসে দেখত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম রাকাতেই আছেনকারণ তিনি প্রথম রাকাত লম্বা করতেন[55]
আবু বারজা আসলামি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত শেষ করতেনঅতঃপর লোকেরা ফিরে যাওয়ার সময় একে অপরকে চিনতে পারত। তিনি ফজরের দুরাকাতে অথবা তার কোন এক রাকাতে ষাট থেকে একশত আয়াত পড়তেন[56]
আমাদের শায়খ ইমাম ইব্‌ন বায রহ.কে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের কিরাতের ব্যাপারে বলতে শোনেছি: ফজরে উত্তম হচ্ছে তিওয়ালে মুফাসসাল পড়া[57]জোহরআসর ও এশায় আওসাতে মুফাসসাল এবং মাগরিবে কিসারে মুফাসসাল। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এরূপ কিরাত পড়তেনতবে সফরে অথবা অসুস্থতার কারণে ফজরের সালাতে কিসার সূরা পড়া দোষণীয় নয়তবে উত্তম হচ্ছে উল্লেখিত পরিমাপ অনুযায়ী সালাত পড়া দলিল সুলাইমান ইব্‌ন ইয়াসার সূত্রে আবু হুরায়ারা[58] থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস[59]
ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম রহ. ফাতেহার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিরাতের ব্যাপারে বলেন: তিনি সূরা ফাতেহা শেষ করে অন্য সূরা আরম্ভ করতেনঅধিকাংশ সময় দীর্ঘ কিরাত পড়তেনতবে কোন কারণে যেমন সফর অথবা অন্য প্রয়োজনে ছোট করতেনতবে সাধারণত তিনি মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতেন[60] আমি বলি: কিরাতের ব্যাপারে সকল সময়সকল অবস্থা ও সর্বক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করা উত্তম।[61]

১২. সম্পূর্ণ কিরাত শেষ করে শ্বাষ ফিরে আসা পর্যন্ত সামান্য বিরতি নেবে যেন রুকুর সাথে কিরাত মিলে না যায়ফাতেহার পূর্বের বিরতি এমন নয়কারণ সেখানে সালাত আরম্ভের দোয়া পড়বেতাই সেখানে দোয়া পরিমাণ বিরতি নেবে। হাসানের সূত্রে সামুরার সনদে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত:

«أنه كان يسكت سكتتين: إذا استفتح الصلاة وإذا فرغ من القراءة كلها».
তিনি দুটি বিরতি নিতেনএকটি যখন সালাত আরম্ভ করতেন অপরটি যখন তিনি সম্পূর্ণ কিরাত থেকে ফারেগ হতেন[62] ইমাম তিরমিযি বলেন: এটাই একাধিক আলেমের অভিমততারা মুস্তাহাব মনে করেন ইমাম সালাত আরাম্ভ করে ও কিরাত শেষ করে সামান্য বিরতি নেবে। ইমাম আহমদইসহাক ও আমাদের সাথীবৃন্দ অনুরূপই বলেছেন।

১৩. কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উভয় হাত উঠিয়ে রুকু করবেমাথা পিঠ বরাবর রাখবেউভয় হাত হাটুর উপরে রাখবে ও আঙুলগুলো ফাঁকা রাখবে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱرۡكَعُواْ وَٱسۡجُدُواْۤ وَٱعۡبُدُواْ رَبَّكُمۡ وَٱفۡعَلُواْ ٱلۡخَيۡرَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ۩ ٧٧﴾ [الحج:77 ]
হে মুমিনগণতোমরা রুক করসিজদা করতোমাদের রবের ইবাদাত কর এবং ভাল কাজ করআশা করা যায় তোমরা সফল হতে পারবে[63]
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিতসালাতে ভুলকারী ব্যক্তির হাদিসে রয়েছে:«ثم اركع حتى تطمئنَّ راكعًا» অতঃপর তুমি রুকু কর এবং রুকু অবস্থায় স্থির হও[64] আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিততিনি বলেন:
«كان رسول الله  إذا قام إلى الصلاة يكبر حين يقوم، ثم يكبر حين يركع» ، وفي لفظ: «إنه كان يصلي بهم فيكبر كلما خفض ورفع فإذا انصرف قال: إني لأشبهكم صلاة برسول الله »؛
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেন তাকবির বলতেনঅতঃপর তাকবির বলতেন যখন রুকু করতেন[65] এভাবেও বর্ণিত আছে যে, “তিনি তাদের সাথে সালাত আদায় করতেন এবং প্রত্যেক উঠা ও নামার সময় তাকবির বলতেনঅতঃপর বলতেন তোমাদের মধ্যে আমার সালাতই রাসূলের সালাতের সাথে বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ[66] আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর থেকে বর্ণিত:
«كان يرفع يديه حذو منكبيه إذا افتتح الصلاة، وإذا كبر للركوع...»
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত আরম্ভ করতেন ও যখন রুকু করতেন উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন...[67]
 «كان إذا كبر رفع يديه حتى يحاذي بهما أذنيه وإذا ركع رفع يديه حتى يحاذي بهما أذنيه»؛
মালেক ইব্‌ন হুয়াইরিস থেকে বর্ণিত: যখন তিনি তাকবির বলতেনউভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাতেন এবং যখন রুকু করতেন উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাতেন[68] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত:
«وكان إذا ركع لم يشخص رأسه ولم يصوِّبه ولكن بين ذلك»؛
যখন তিনি রুকু করতেন মাথা উঁচু করে রাখতেন না আবার তাক করেও রাখতেন নাবরং মধ্যম পন্থায় রাখতেন[69] আবু হুমাইদ সায়েদি রাদিয়াল্লাহু আনহু কতক সাহাবিকে বলেন:
«أنا كنت أحفظكم لصلاة رسول الله ، رأيته إذا كبر جعل يديه حذو منكبيه، وإذا ركع أمكن يديه من ركبتيه [وفرج بين أصابعه] ثم هصرظهره...». وفي لفظ: «ثم ركع فوضع يديه على ركبتيه،كأنه قابضٌ عليهما، ووتَّريديه فتجافى عن جنبيه..».
তোমাদের চেয়ে আমিই রাসূলের সালাত বিশুদ্ধভাবে সংরক্ষণ করেছিআমি তাকে দেখেছি যখন তিনি তাকবির বলতেন উভয় হাত কাঁধ বরাবর করতেনযখন তিনি রুকু করতেন উভয় হাত দ্বারা হাটু ধরতেন, (আঙ্গুলগুলো ফাঁকা রাখতেন) অতঃপর মাটির দিকে পিঠ ঝুকান...[70] এভাবেও বর্ণিত আছে, “অতঃপর তিনি রুকু করে উভয় হাত হাটুর উপর এমনভাবে রাখেনযেন তিনি হাটুদ্বয় পাকড়ে ছিলেন এবং উভয় হাত দুই প্বার্শ থেকে পৃথক রাখেন...[71]
রিফাআ ইব্‌ন রাফে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন:
«وإذا ركعت فضع راحتيك على ركبتيك وامدد ظهرك»،
যখন তুমি রুকু করতোমার হাতের কব্জিদ্বয় হাটুর উপর রাখ এবং পিঠ লম্বা কর[72] ওবেসা ইব্‌ন মাবাদ বলেন:
رأيت رسول الله  يصلي، فكان إذا ركع سوَّى ظهره حتى لو صُبَّ عليه الماء لاستقرّ».
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাত আদায় করতে দেখেছিতিনি যখন রুকু করতেন পিঠ বরাবর রাখতেনএমনকি যদি তার উপর পানি রাখা হত তাও স্থির থাকত[73] রুকুতে স্থির অবস্থান করবে। কারণ হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু জনৈক ব্যক্তিকে দেখে বলেনযে রুকু সেজদা ঠিকভাবে করছিল না:
«ما صلَّيتَ، ولو مُتَّ مُتَّ على غير الفطرة التي فطر الله [عليها] محمدًا »،
তুমি সালাত আদায় করনিযদি তুমি মারা যাও তাহলে তুমি সে তরিকার উপরই মারা যাবেযার উপর মুহাম্মদকে সৃষ্টি করা হয়নি[74] বারা ইব্‌ন আযেব থেকে বর্ণিত:
«كان ركوع النبي ، وسجوده، وقعوده بين السجدتين، وإذا رفع رأسه من الركوع ما خلا القيام والقعود قريبًا من السواء».
রাসূলের রুকুসেজদা ও দুই সেজদার মাঝখানে বসা এবং রুকু থেকে উঠে সোজা দাঁড়ানো সব সমপরিমাণের ছিলকিয়াম ও বৈঠক ব্যতীত[75]

১৪. রুকুতে বলা: «سبحان ربي العظيم» তিনবার বলা উত্তম। হুজায়ফাতুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু বলতেন: «سبحان ربي العظيم» এবং সেজদায় বলতেন[76]«سبحان ربي الأعلى» অপর বর্ণনায় আছে: «سبحان ربي العظيم»তিনবার এবং সেজদায় বলবে: «سبحان ربي الأعلى» তিনবার।[77] এ ছাড়া অন্যান্য দোয়া পড়ারও অনুমতি রয়েছেযা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিতযেমন:
এক. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদিসতিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু ও সেজদায় বেশী বেশী বলতেন:[78] سبحانك اللهم ربنا وبحمدك، اللهم اغفر لي».
দুই. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার রুকতে বলতেন:[79]
«سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ، ربُّ الملائكة والروح».
তিন. আউফ ইব্‌ন মালেক আশজায়ি থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকুতে বলতেন:
«سبحان ذي الجبروت والملكوت والكبرياء والعظمة»،
অতঃপর তিনি দাঁড়ানোর সমপরিমাণ সেজদা করতেন এবং সেজদায় অনুরূপ বলতেন।[80]
চার. আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রুকু করতেন বলতেন:[81]
«اللهم لك ركعتُ، وبك آمنتُ، ولك أسلمتُ، خشع لك سمعي وبصري ومُخّي وعظمي وعَصَبي».
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু ও সেজদায় কুরআন থেকে নিষেধ করে বলেন:
«ألا وإني نُهيت أن أقرأ القرآن راكعًا أو ساجدًا، وأما الركوع فعظِّموا فيه الرب U، وأما السجود فاجتهدوا في الدعاء فقَمِنٌ أن يُستجاب لكم».
আমি তোমাদেরকে রুকু ও সেজদা অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত থেকে নিষেধ করছিতোমরা রুকুতে আল্লাহর বড়ত্ব বর্ণনা কর এবং সেজদায় বেশী বেশী দো‘আ কর। এটা দো‘আ কবুলের উপযুক্ত সময়[82]

১৫. রুকু থেকে মাথা উঠানোর সময় উভয় কাঁধ অথবা উভয় কান পর্যন্ত উভয় হাত উঠিয়ে বলা: سمع الله لمن حمده ইমাম কিংবা মুনফারিদ উভয়ের বলা অতঃপর উভয়ের বলা: «ربنا ولك الحمد»؛ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম «سمع الله لمن حمده» বলেবলতেন[83]«اللهم ربنا ولك الحمد».যদি মুক্তাদি হয়তাহলে রুকু থেকে মাথা উঠানোর সময় বলবে: «ربنا ولك الحمد»؛ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন ইমাম سمع الله لمن حمده বলেতোমরা বলবে: اللهم ربَّنا لك الحمد؛ কারণযার কথা ফেরেশতাদের কথার সাথে মিলে যাবেতার পূর্বের সকল পাপ মোচন করে দেয়া হবে।[84]
اللهم ربَّنا لك الحمد চারভাবে বর্ণিত আছে:
এক প্রকার: «ربنا لك الحمد» আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেননবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দাঁড়িয়ে তাকবির বলতেনঅতঃপর তাকবির বলতেন যখন তিনি রুকু করতেন। অতঃপর বলতেন: سمع الله لمن حمده যখন তিনি রুকু থেকে পিঠ সোজা করতেনঅতঃপর তিনি দাঁড়িয় বলতেন[85]«ربنا لك الحمد».
দ্বিতীয় প্রকার: «ربنا ولك الحمد»؛ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন:
«إنما جُعل الإمام ليُؤتمَّ به، فإذا صلى قائمًا فصلوا قيامًا، وإذا ركع فاركعوا، وإذا رفع فارفعوا، وإذا سجد فاسجدوا، وإذا قال سمع الله لمن حمده فقولوا: ربنا ولك الحمد».
আনুগত্য করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছেযখন সে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেতোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করযখন সে রুকু করে তোমরা রুকু করযখন সে উঠে তোমরাও উঠযখন সে সেজদা করে তোমরাও সেজদা করযখন সে বলে: سمع الله لمن حمده তোমরা বল[86]ربنا ولك الحمد».
তৃতীয় প্রকার: اللهم ربَّنا لك الحمد আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন ইমাম বলে: سمع الله لمن حمده তোমরা বল: اللهم ربَّنا لك الحمد، কারণ যার কথা ফেরেশতাদের কথার সাথে মিলে যাবেতার পূর্বের সকল পাপ মোচন করে দেয়া হবে[87]
চতুর্থ প্রকার: «اللهم ربَّنا ولك الحمد»؛ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বলতেন: سمع الله لمن حمده، অতঃপর বলতেন:[88] «اللهم ربنا ولك الحمد»، সবগুলো যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিততাই কখনো এটা কখনো ওটা পড়া উত্তম। ইমামমুক্তাদি ও একাকি সালাত আদায়কারীদের জন্য উত্তম হচ্ছে: «ربنا ولك الحمد» পড়ার পরঅতিরিক্ত বলা:
«حمدًا كثيرًا طيبًا مُباركًا فيه»[89] «ملء السموات،وملء الأرض،[وما بينهما] وملء ما شئت من شيء بعد،أهل الثناء والمجد، أحقّ ما قال العبد،وكلنا لك عبد،اللهم لا مانع لما أعطيت،ولا مُعطي لما منعت،ولا ينفع ذا الجد منك الجد» «اللهم طهِّرْني بالثلج، والبَرَدِ، والماء البارد،اللهم طهِّرْني من الذنوب والخطايا كما يُنَقَّى الثوبُ الأبيضُ من الوسخ»[90] «لربي الحمد»؛
লি রাব্বিল হামদ” বারবার বলবে। ইমামমুক্তাদি ও একাকি সালাত আদায়কারীর জন্য উত্তম হচ্ছে বুকে ডান হাতের উপর বাম হাত রাখাযেরূপ রুকুর পূর্বে রেখেছিল। কারণ ওয়ায়েল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন:
«رأيت رسول الله  إذا كان قائمًا في الصلاة قبض بيمينه على شماله»
আমি দেখেছিরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়ানো থাকতেনতখন তিনি ডান হাত দ্বারা বাম হাত পাকড়াও করতেন[91]
রুকু থেকে উঠে স্থির হয়ে দাঁড়াবে। সাবেত থেকে বর্ণিতআনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমি তোমাদের সাথে সেরূপ সালাত আদায় করতে কার্পণ্য করব নাযেরূপ আমাদের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করেছেন। তিনি বলেন: আনাস এমন কিছু কাজ করতেনযা আমি তোমাদেরকে করতে দেখি নাতিনি যখন রুকু থেকে উঠতেন সোজা হয়ে দাঁড়াতেনকেউ বলতে পারত তিনি ভুলে গেছেনঅনুরূপ সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে তিনি সোজা বসতেনকেউ বলতে পারত তিনি ভুলে গেছেন।[92] এসব স্থানে উল্লেখিত জিকির ব্যতীত অন্যান্য অনুমোদিত জিকির পড়াও বৈধ।
১৬. তাকবির বলে সেজদা করবেসম্ভব হলে উভয় হাত হাটুর উপর রেখেযদি কষ্ট হয় তাহলে হাটুর আগে হাত রাখবে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱرۡكَعُواْ وَٱسۡجُدُواْۤ وَٱعۡبُدُواْ رَبَّكُمۡ وَٱفۡعَلُواْ ٱلۡخَيۡرَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ۩ ٧٧﴾[الحج:77 ]
হে মুমিনগণতোমরা রুক করসিজদা করতোমাদের রবের ইবাদাত কর এবং ভাল কাজ করআশা করা যায় তোমরা সফল হতে পারবে[93]
সালাতে ভুলকারীর হাদিসে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত: অতঃপর সেজদা করসেজদায় একেবারে স্থির হও[94] তার থেকে অপর হাদিসে রয়েছে: সেজদার জন্য যখন ঝুকবেতাকবির বলবে[95] ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসে রয়েছে: আমি দেখেছিযখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেজদা করেনউভয় হাতের পূর্বে তিনি হাটু রেখেছেনআর তার উঠার সময় হাটুর পূর্বে হাত উঠিয়েছেন[96] হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী রাখবে। আবু হুমাইদ সায়েদি থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে:
«فإذا سجد وضع يديه غير مفترشٍ ولا قابضهما، واستقبل بأطراف أصابع رجليه القبلة»
যখন সেজদা করবে উভয় হাতকে বিছিয়ে রাখবে নাআবার মুষ্টিবদ্ধ করেও রাখবে নাপাযের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী করে রাখবে[97] হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে কিবলামুখী রাখবে। কারণ আলকামা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সেজদা করতেনতখন তিনি আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখতেন[98] আবু হুমাইদের হাদিসে রয়েছে: হাতের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী রাখবে[99] পায়ের আঙ্গুলগুলো খোলা রাখবেকারণ আবু হুমাইদ থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে: অতঃপর দুবাহুকে পার্শ্ব থেকে পৃথক রাখবে ও পায়ের আঙ্গুলগুলো খোলা রাখবে[100]
সাত অঙ্গের দ্বারা সেজদা করবেকপালের সাথে নাকদুহাতদুহাটুউভয় পায়ের আঙ্গুলের ভেতরের অংশ। ইব্‌ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أمرت أن أسجد على سبعة أعظم: على الجبهة  وأشار بيده على أنفه  واليدين، والركبتين، وأطراف القدمين، ولا نكفُت الثياب والشعر» وفي لفظ لمسلم: «ولا أكفّ ثوبًا ولا شعرًا»
আমাকে সাত অঙ্গের উপর সেজদা করার নিদের্শ দেয়া হয়েছে: কপাল- এর সাথে তিনি ইশারা করে নাকের দিকে ঈঙ্গিত করেছেন- দুহাতদুহাটুদুপায়ের সম্মুখভাগআর আমরা কাপড় ও চুল আটকে রাখব না। মুসলিমের বর্ণনায় আছে: আমি যেন কাপড় ও চুল আটকে না রাখি[101] পার্শ্বদ্বয় থেকে বাহুদ্বয় পৃথক রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মালেক ইব্‌ন বুহায়না বলেন,
«كان إذا صلَّى فرَّج بين يديه حتى يبدو بياض إبطيه»
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত আদায় করতেনতখন উভয় হাত এমনভাবে পৃথক রাখতেন যেতার বোগল পর্যন্ত দেখা যেত[102] পেট রান থেকে ও রান পায়ের গোছা থেকে পৃথক রাখবে এবং উভয় রানের মধ্যে ফাঁকা রাখবে। আবু হুমাইদ থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: যখন সেজদা করে তখন যেন উভয় রান পৃথক রাখেপেটের ভর যেন রানের উপর না দেয়[103] উভয় হাতের কব্জি কাঁধ বরাবর রাখবে। কারণ আবু হুমাইদ থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: অতঃপর তিনি সেজদা করেছেনযমীনের উপর নাক ও কপাল স্থির করেছেনউভয় পার্শ্ব থেকে হাত পৃথক রেখেছেন ও উভয় হাতের কব্জিকে কাঁধ বরাবর রেখেছেন[104] অথবা উভয় হাত কান বরাবর রাখবে। যেমন ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসে এসেছে। অতঃপর তিনি সেজদা করেছেন এবং উভয় হাতের কব্জি কান বরাবর রেখেছেন[105] এটা মূলত বারার হাদিসের অনুরূপযখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলসেজদার সময় রাসূল কোথায় চেহারা রাখতেনতিনি বলেছিলেন: দুই হাতের কব্জির মাঝখানে[106] উভয় হাতের বাহু যমীন থেকে আলাদা রাখবে। কারণ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা সেজদার মধ্যে স্থির হওতোমাদের কেউ তার বাহুদ্বয় কুকুরের ন্যায় বিছিয়ে রাখবে না[107] বারা থেকে একটি মরফু হাদিসে রয়েছে: যখন তুমি সেজদা করতোমার হাত মাটিতে রাখ ও বাহুদ্বয় উপরে রাখ[108] উভয় পা মিলিয়ে রাখবে। আয়েশা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: আমি তাকে সেজদা অবস্থায় পেলামতার দুনো গোড়ালি মিলানো ছিল এবং পায়ের আঙ্গুলগুলো ছিল কিবলামুখী[109] উভয় পা খাড়া করে রাখবে। আয়েশার হাদিসে রয়েছে: আমি তাকে তালাশ করলামআমার হাত তার পায়ের উপর পরলতিনি তখন সেজদায় ছিলেনতার পাগুলো ছিল খাড়া[110]
১৭. সেজদায় বলবে: «سبحان ربي الأعلى» তিনবার বলা উত্তম। যেমন হুজায়ফার হাদিসে এসেছে। ইচ্ছা করলে অন্যান্য হাদিসে বর্ণিত দোয়াও পড়তে পারে। যেমন:
এক. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিস মোতাবিক[111]«سبحانك اللهم ربنا وبحمدك اللهم اغفر لي»
দুই. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিস মোতাবেক[112]«سُبُّوحٌ، قُدُّوسٌ، ربُّ الملائكة والروح»؛
তিন[113]«سبحان ذي الجبروت، والملكوت، والكبرياء، والعظمة».
চার. আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস মোতাবেক[114]:
 «اللهم لك سجدتُ، وبك آمنتُ، ولك أسلمتُ،سجد وجهي للذي خلقه وصوَّره،وشق سمعه وبصره،تبارك الله أحسن الخالقين»؛
পাঁচ. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিস মোতাবেক[115]:
 «اللهم إني أعوذ برضاك من سخطك، وبمعافاتك من عقوبتك،وأعوذ بك منك،لا أحصي ثناءً عليك أنت كما أثنيت على نفسك»؛
ছয়. আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস মোতাবেক[116]:
 «اللهم اغفر لي ذنبي كله، دقّه وجلّه، وأوّله وآخره، وعلانيته وسرّه» ؛
সেজদায় খুব বেশী দো‘আ করবে এবং আল্লাহর নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করবে। হোক সালাত ফরজ কিংবা নফল। কারণ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: সেজদা অবস্থায় বান্দাগণ তার রবের অতি নিকটবর্তী হয়অতএব তোমরা সেখানে খুব বেশী করে দোয়া কর[117] ইব্‌ন আব্বাসের হাদিসে আছে: আর তোমরা রুকুতে আল্লাহর খুব বড়ত্ব বর্ণনা কর এবং সেজদায় খুব দো‘আ করতাহলে তোমাদের দো‘আ কবুল করা হবে[118]

১৮. তাকবির বলে সেজদা থেকে মাথা উঠাবে এবং স্থির হয়ে বসবে। আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিতসালাতে ভুলকারীর হাদিসে আছে: অতঃপর তুমি মাথা উঠিয়ে স্থির হয়ে বস[119] বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসবেডান পা খাড়া রাখবে এবং আঙ্গুলগুলো কিবলার দিকে রাখবে। কারণ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: তিনি বাম পা বিছিয়ে রাখতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন[120] উভয় হাত রানের উপর রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন জুবায়ের তার পিতা থেকে মারফূ সনদে বর্ণনা করেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বসতেন তখন তিনি দো‘আ করতেন এবং ডান হাত ডান রানের উপর ও বাম হাত বাম রানের রাখতেন[121] অথবা উভয় হাত হাটুর উপর রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে বসতেনতখন তিনি তার দুহাত হাটুর উপরে রাখতেন[122] অথবা ডান হাত ডান রানের উপরবাম হাত বাম রানের উপর এবং বাম কব্জি দ্বারা হাটু পাকড়াও করে রাখবে। যেমন আব্দুল্লাহ ইব্‌ন জুবায়ের থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে।
মুদ্দাকথা হাত রাখার তিনটি পদ্ধতি জানা গেল:
এক. ডান হাত ডান রানের উপর ও বাম হাত বাম রানের উপর।
দুই. ডান হাত ডান হাটুর উপর ও বাম হাত বাম হাটুর উপর।
তিন. ডান কব্জি ডান রানের উপর ও বাম কব্জি বাম রানের উপর এবং বাম কব্জি দ্বারা হাটু আঁকড়ে ধরবে।[123]
উভয় হাতের কব্জি রাখার পদ্ধতি: মুসল্লি তার বাম হাত বিছিয়ে রাখবে। যেমন ইব্‌ন ওমর থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: তার বাম হাত ছিল হাটুর উপর বিছানো[124] আর উভয় বাহু রানের উপর রাখবে। কারণ ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসে আছে: তিনি তার দুবাহু রানের উপর রেখেছেন[125] আর ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলি ও অনামিকা দ্বারা মুষ্ঠি বানাবে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা আঙ্গুলি দ্বারা হালকা বানাবেঅতঃপর ডান হাতের কব্জি ডান রানের উপর রাখবে। ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসে আছে: অতঃপর কিবলা মুখী হয়ে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠান এবং ডান হাত দিয়ে বাম হাত পাকড়াও করেন। যখন তিনি রুকু করার ইচ্ছা করেনঅনুরূপ করেন এবং উভয় হাত হাটুর উপর রাখেনযখন তিনি রুকু থেকে নিজ মাথা উঠান অনুরূপ হাত তোলেন। যখন তিনি সেজদা করেনতখনও তিনি অনুরূপ করেন। অতঃপর বাম পা বিছিয়ে বসেন এবং তার বাম হাত বাম রানের উপর রাখেন। আর ডান হাতের কব্জি রাখেন ডান রানের উপর। দুই আঙ্গুল দ্বারা হালকা বানান। আমি তাকে বলতে দেখলাম: এরূপ”, ‘বিশর’ (বর্ণনাকারী) বৃদ্ধা ও মধ্যমা আঙ্গুলি দ্বারা হালকা বানিয়ে ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন[126] ইমাম ইব্‌ন কাইয়ূম এটাই গ্রহণ করেছেন যেমুসল্লি দুই সেজদার মাঝখানে অনুরূপ করবে[127]
১৯. দুই সেজদার মাঝখানে বলবে: «ربِّ اغفرْ لي، ربِّ اغفر لي»؛ হুজায়ফা থেকে একটি মারফূ হাদিসে বর্ণিত: তিনি দুই সেজদার মাঝখানে সেজদার সমান বসতেন এবং বলতেন[128]«ربّ اغفر لي رب اغفر لي» এর চেয়ে অধিক পড়ারও অনুমতি রয়েছেযেমন:
«اللهم اغفر لي، وارحمني [وعافني، واهدني] واجبرني، وارزقني، وارفعني»؛
কারণ ইব্‌ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই সেজদার মাঝখানে বলতেন[129]:
 «اللهم اغفر لي وارحمني وعافني واهدني وارزقني» ،
ইব্‌ন মাজাহ নিম্নের শব্দে বর্ণনা করেছেন[130]:
 «ربِّ اغفر لي وارحمني، واجبرني، وارزقني، وارفعني».
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রুকনটি সেজদা পরিমাণ লম্বা করতেন। যেমন বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রুকুসেজদাদুই সেজদার মাঝখানে বসা এবং রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে স্থির থাকা সমান ছিলশুধু কিয়াম ও বৈঠক ব্যতীত[131]

২০. তাকবির বলে দ্বিতীয় সেজদা করবেযেমন প্রথম সেজদাতে করেছিল। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতসালাতে ভুলকারীর হাদিসে রয়েছে: অতঃপর তুমি সেজদা করসেজদা রত অবস্থায় স্থির হওঅতঃপর মাথা উঠিয়ে স্থির চিত্তে বসঅতঃপর সেজদা কর এবং স্থির হও। অতঃপর তোমার অবশিষ্ট সালাতে অনুরূপ করতে থাক[132]
তার থেকে অপর হাদিসে আছে: অতঃপর যখন সেজদায় ঝুকবে তাকবির বলবেঅতঃপর সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে তাকবির বলবে। অতঃপর সেজদার সময় তাকবির বলবে। অতঃপর মাথা উঠানোর সময় তাকবির বলবেঅতঃপর অনুরূপ করতে থাকবে অবশিষ্ট সালাতে এবং যখন দুরাকাত শেষে বৈঠকের পর দাঁড়াবে তাকবির বলবে[133]
২১. তাকবির বলে মাথা উঠাবে এবং সামান্য সময় বসবেযেটাকে জালসায়ে ইস্তেরাহা বলে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতসালাতে ভুলকারীর হাদিসে রয়েছে:
«ثم اسجدْ حتى تطمئنَّ ساجدًا، ثم ارفع حتى تطمئن جالسًا، ثم اسجد حتى تطمئن ساجدًا، ثم ارفع حتى تطمئن جالسًا، ثم افعل ذلك في صلاتك كلها»، قال أبو أسامة في الأخير: «حتى تستوي قائمًا»؛
অতঃপর স্থির হয়ে সেজদা করঅতঃপর স্থির হয়ে বসঅতঃপর স্থির হয়ে সেজদা করঅতঃপর মাথা উঠিয়ে স্থির হয়ে বসতোমার অবশিষ্ট সালাতে অনুরূপ করতে থাক আবু উসামা বলেন: অতঃপর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও[134] তার থেকে আরেকটি হাদিসে আছে:
«ثم يكبر حين يرفع رأسه ثم يفعل ذلك في الصلاة كلها حتى يقضيها، ويكبر حين يقوم من الثنتين بعد الجلوس»،
অতঃপর মাথা উঠানোর সময় তাকবির বলবেঅতঃপর অবশিষ্ট সালাতে অনুরূপ করতে থাকবে এবং দুরাকাত পর যখন উঠবে তাকবির বলবে[135] জালছায়ে ইস্তেরাহার ব্যাপারে মালেক ইব্‌ন হুয়াইরিসের হাদিসে রয়েছে:
«أنه رأى النبي  يصلّي فإذا كان في وتر من صلاته لم ينهض حتى يستويَ قاعدًا» ،
তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাত আদায় করতে দেখেছেনযখন তিনি বেজোড় রাকাতে থাকতেনউঠতেন না যতক্ষণ না সোজা হয়ে বসতেন[136] অন্য শব্দে মালেকের হাদিসেও জালসায়ে ইস্তেরাহার কথা এসেছে:
 «أنه صلى بأصحابه، فكان يجلس إذا رفع رأسه من السجود قبل أن ينهض في الركعة الأولى».
তিনি সাহাবিদের নিয়ে সালাত আদায় করলেনতিনি সেজদা থেকে বসতেনপ্রথম রাকাতের জন্য উঠে দাঁড়ানোর আগে[137] সালাতে ভুলকারীর হাদিসেও এ বসার কথা রয়েছে:
 «ثم اسجدْ حتى تطمئنَّ ساجدًا، ثم ارفعْ حتى تطمئنَّ جالسًا، ثم اسجدْ حتى تطمئنَّ ساجدًا، ثم ارفعْ حتى تطمئنَّ جالسًا، ثم افعلْ ذلك في صلاتك كلها»،
অতঃপর সেজদা করযতক্ষণ না সেজদায় গিয়ে স্থির হওঅতঃপর মাথা উঠাওস্থির হয়ে বসঅতঃপর সেজদা করসেজদায় গিয়ে স্থির হওঅতঃপর মাথা উঠাওস্থির হয়ে দাঁড়াও অতঃপর তোমার অবশিষ্ট সালাতে অনুরূপ করতে থাক[138] আবু হুমাইদের হাদিসেও এ জলসার কথা এসেছে:
«ثم يهوي إلى الأرض فيجافي يديه عن جنبيه، ثم يرفع رأسه ويثني رجله اليسرى فيقعد عليها ويفتح أصابع رجليه إذا سجد، ثم يسجد، ثم يقول: الله أكبر، ويرفع رأسه ويثني رجله اليسرى فيقعد عليها حتى يرجع كل عظم إلى موضعه، ثم يصنع في الأخرى مثل ذلك».
অতঃপর যমীনের দিকে ঝুকবে এবং উভয় হাত পার্শ্ব থেকে আলাদা রাখবেঅতঃপর মাথা উঠাবে এবং বাম পা নরম করে তার উপর বসবেসেজদার সময় পায়ের আঙ্গুলগুলো খোলা রাখবেঅতঃপর সেজদা করবে। অতঃপর বলবে: আল্লাহু আকবার’ এবং মাথা উঠাবে ও বাম পা নরম করে তার উপর বসবেযেন প্রত্যেক হাড্ডি তার জায়গায় এসে পৌঁছে[139] অতঃপর দ্বিতীয় রাকাতেও অনুরূপ করবে[140]

২২. যদি সম্ভব হয়তাহলে পাহাটু ও রানের উপর ভর দিয়ে দ্বিতীয় রাকা‘তের জন্য দাঁড়াবে। কারণ ওয়ায়েলের হাদিসে আছে: যখন উঠবে হাটুর পূর্বে হাত উঠাবে[141] আর যদি কষ্ট হয়তাহলে যমীনের উপর ভর দিবে। কারণ মালেক ইব্‌ন হুয়াইরিসের হাদিসে আছে: যখন দ্বিতীয় সেজদা থেকে মাথা উঠাবেতখন বসবে ও যমীনের উপর ভর দিয়ে দাঁড়াবে[142]

২৩. দ্বিতীয় রাকাত প্রথম রাকাতের ন্যায় পড়বে। কারণ সালাতে ভুলকারীর হাদিসে আছে: অতঃপর এসব কাজ তোমার পুরো সালাতে কর[143] তবে পাঁচটি কাজ করবে না:
এক. তাকবিরে তাহরিমা। কারণ তাকবিরে তাহরিমা হচ্ছে সালাতে প্রবেশ করার জন্য।
দু্ই. তাকবিরে তাহরিমার পর চুপ থাকা দ্বিতীয় রাকাতে তাকবিরে তাহরিমার পর চুপ থাকবে না। কারণ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠতেনতিনি সূরা ফাতেহা দ্বারা আরম্ভ করতেনচুপ থাকতেন না[144]
তিন. তাকবিরে তাহরিমার পর দোয়া পড়া। কারণ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠতেনতিনি সূরা ফাতেহা দ্বারা আরম্ভ করতেন[145]
চার. প্রথম রাকাতের ন্যায় লম্বা করবে না। বরং প্রত্যেক সালাতে দ্বিতীয় রাকাত প্রথম রাকাত থেকে ছোট হবে। কারণ আবু কাতাদা থেকে বর্ণিত আছে: প্রথম রাকাত লম্বা করবে ও দ্বিতীয় রাকাত ছোট করবে[146] “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতে প্রথম দুরাকাত লম্বা করতেন ও শেষের দুরাকাত ছোট করতেন[147]
পাঁচ. নতুন করে নিয়ত বাঁধবে নাকারণ পূর্বের নিয়ত যথেষ্ট। দ্বিতীয়ত নতুন করে নিয়ত করলে প্রথম রাকাত বাতিল হয়ে যাবে।[148]
দ্বিতীয় রাকাতে আউযুবিল্লাহ’ সম্পর্কে কেউ বলেছেন: প্রত্যেক রাকাতেই তা বৈধ। কারণ দুই কিরাতের মাঝখানে কিছু আজকার ও কর্মের ফলে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হয়েছেতাই প্রত্যেক রাকাতে শয়তান থেকে পানাহ চাইবে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿فَإِذَا قَرَأۡتَ ٱلۡقُرۡءَانَ فَٱسۡتَعِذۡ بِٱللَّهِ مِنَ ٱلشَّيۡطَٰنِ ٱلرَّجِيمِ ٩٨﴾[النحل:98 ]
সুতরাং যখন তুমি কুরআন পড়বে তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান হতে পানাহ চাও[149] তাই আউযুবিল্লাহ পড়া উত্তম। কেউ বলেছেন: শুধু প্রথম রাকাতেই আউযুবিল্লাহ পড়বে। কারণ পুরো সালাত মিলে একটি কর্মদুই কিরাতের মাঝখানে কোন নিরবতা বিচ্ছেদ সৃষ্টি করেনিবরং পুরোটা ছিল জিকির। অতএব এতে প্রত্যেক কিরাত এক কিরাতের মতসুতরাং সেখানে এক আউযুবিল্লাহ যথেষ্ট হবে। হ্যাঁযদি প্রথম রাকাতে আউযুবিল্লাহ পড়ে না থাকেতাহলে দ্বিতীয় রাকাতে পড়বে।[150]
আর প্রত্যেক রাকাতেই বিসমিল্লাহ পড়া মুস্তাহাবকারণ এর মাধ্যমে সূরা আরম্ভ করা হয়।[151]

২৪. যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট সালাত হয়যেমন ফজরজুমা ও দুই ঈদের সালাততাহলে দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদা থেকে ফারেগ হয়ে বসবেডান পা খাড়া রাখবে ও বাম পা বিছিয়ে দেবে। কারণ আবু হুমাইদের হাদিসে আছে: যখন দুরাকাতের মধ্যে বসবেতখন বাম পায়ের উপর বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে[152] এখানে ও দুই সেজদার মাঝখানে বসার নিয়ম এক[153] অর্থাৎ বাম হাত বাম রানের উপর রাখবে অথবা বাম হাটুর উপর রাখবেআর ডান হাত ডান রানের উপর রাখবে। ডান হাতের সব আঙ্গুলগুলো মুষ্টি বদ্ধ করে রাখবে শুধু শাহাদাত আঙ্গুলি ব্যতীততার মাধ্যমে তাওহিদের প্রতি ইশারা করবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমরের হাদিসে আছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে বসতেনতখন তিনি ডান হাতের কব্জি ডান রানের উপর রাখতেন। সকল আঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ করে রাখতেন এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি সংলগ্ন আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেনআর বাম হাতের কব্জি বাম রানের উপর রাখতেন[154] অথবা বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা আঙ্গুল দ্বারা হালকা বানাবে এবং কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙ্গুল মুষ্টি বদ্ধ রেখে শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করবে। কারণ ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসে আছে: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি তিনি বৃদ্ধা ও মধ্যমা আঙ্গুলি দ্বারা হালকা বানিয়েছেন এবং শাহাদাত আঙ্গুলি উপরে উঠিয়েছেনএর দ্বারা তিনি তাশাহুদে দোয়া করতেন[155] অথবা তিপ্পান্ন গণনার ন্যায় হাতের মুষ্টি বানাবে এবং শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবে। কারণ ইব্‌ন ওমরের হাদিসে আছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহুদে বসতেন বাম হাত বাম রানের উপর ও ডান হাত ডান রানের উপর রাখতেন, তিপ্পান্ন গণনার ন্যায় হাতের মুষ্টি বানাতেন ও শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন[156]
এভাবে ডান হাতের তিনটি অবস্থা প্রকাশ পায়।
এক. সকল আঙ্গুল মুষ্টি বদ্ধ করে রেখে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করা।
দুই. বৃদ্ধা ও মধ্যমা আঙ্গুলি দ্বারা হালকা বানানো এবং কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙ্গুলি মুষ্টিবদ্ধ করে শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করা।
তিন. তিপ্পান্ন গণনার মত হাত মুষ্টি বদ্ধ করা ও শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করা। এসব পদ্ধতিই বৈধ। বসার সময় শাহাদাত আঙ্গুলির ইশারার দিকে দৃষ্টি রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্‌ন জুবায়ের থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহুদে বসতেন বাম হাত বাম রানের উপর রাখতেন ও শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করতেন। তার দৃষ্টি ইশারা অতিক্রম করত না[157] আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমরের হাদিসে আছে: তিনি ডান হাত ডান রানের উপর রাখেন ও বৃদ্ধাঙ্গুলি সংলগ্ন আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করেনতার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখেন। অতঃপর তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এরূপ করতে দেখেছি[158]
দোয়ার সময় আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করা সুন্নতকিবলার দিকে নাড়াবে ও তার দ্বারা দোয়া করবেতবে দোয়া ও জিকরের স্থান ব্যতীত কোথাও নাড়াবে নাবরং স্থির রাখবে দো‘আর সময় আঙ্গুলি নাড়ানোর দলিল ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসতাতে আছে: অতঃপর তিনি বসেন ও বাম পা বিছিয়ে রাখেনতার বাম হাতের কব্জি বাম হাটুর উপর রাখেন এবং ডান হাতের কব্জি ডান রানের উপর রাখেনঅতঃপর দুটি আঙ্গুল ধরে হালকা বানানঅতঃপর তার আঙ্গুলি উঠানআমি তাকে তা নাড়াতে দেখেছি।[159] আব্দুল্লাহ ইব্‌ন জুবায়ের থেকে বর্ণিত হাদিস দ্বারা বুঝা যায়তিনি সর্বদা আঙ্গুলি নাড়াতেন নাযেমন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়ার সময় তার আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করতেন কিন্তু তা নাড়াতেন না[160] দুই হাদিসের মধ্যে কোন বৈপরিত্ব নেই। কারণ না নাড়ানোর অর্থ হচ্ছে সর্বদা নাড়াতেন নাআবার নাড়ানোর অর্থ হচ্ছে দো‘আর সময় নাড়াতেন।[161]
ইশারা হবে শুধু ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতএক ব্যক্তি দুই আঙ্গুলি দ্বারা দো‘আ করতে ছিলনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এক আঙ্গুলি দ্বারা দো‘আ কর[162] সাদ থেকে বর্ণিততিনি বলেন: আমার কাছ দিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতিক্রম করেনআমি তখন আমার আঙ্গুলিসমূহ দ্বারা দো‘আ করতে ছিলামতিনি বলেন এক আঙ্গুল দ্বারাএক আঙ্গুল দ্বারাতিনি শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন। শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করার হিকমত হচ্ছে আল্লাহ একইশারার সময় তাওহিদ ও তার ইখলাসের নিয়ত করবেতাহলে কথাকর্ম ও বিশ্বাসে তাওহিদের বর্হিঃপ্রকাশ ঘটবে।[163] অতএব প্রমাণিত হল যেশাহাদাত আঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করবে এবং তার মাধ্যমেই দো‘আ করবে।

২৫. এ বৈঠকে তাশাহুদ পড়বেযেমন বলবে[164]:
«التحيات لله، والصلوات، والطيبات، السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته، السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين، أشهد أن لا إله إلا الله [وحده لا شريك له] وأشهد أن محمدًا عبده ورسوله»،
এটা সবচেয়ে বিশুদ্ধ তাশাহুদ।[165] অতঃপর পড়বে[166]:
«اللهم صلِّ على محمد وعلى آل محمد، كما صليت على إبراهيم وعلى آل إبراهيم إنك حميد مجيد، اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد كما باركت على إبراهيم وعلى آل إبراهيم إنك حميد مجيد»،
এটা সবচেয়ে পরিপূর্ণ দরুদ।[167] অতঃপর আল্লাহর নিকট চারটি বস্তু থেকে পানাহ চাইবে:
«اللهم إني أعوذ بك من عذاب جهنم، ومن عذاب القبر، ومن فتنة المحيا والممات، ومن شر فتنة المسيح الدجال»؛
কারণ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: যখন তোমাদের কেউ তাশাহুদ পড়েসে যেন চারটি জিনিস থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চায়যেমন বলে:
اللهم إني أعوذ بك من عذاب جهنم.. الحديث».
ইমাম মুসলিম এভাবে বর্ণনা করেন, “যখন তোমাদের কেউ দ্বিতীয় তাশাহুদ থেকে ফারেগ হয়সে যেন চারটি বস্তু থেকে পানাহ চায়।[168] এবং যা ইচ্ছা দো‘আ করবেযেমন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে বলতেন:
এক.
«اللهم إني أعوذ بك من عذاب القبر، وأعوذ بك من فتنة المسيح الدجال، وأعوذ بك من فتنة المحيا والممات، اللهم إني أعوذ بك من المأثَم والمغرَم»
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন: কেউ তাকে বলল: হে আল্লাহর রাসূলআপনি মাগরাম তথা ঋণ থেকে খুব পানাহ চান! তিনি বললেন:
:«إن الرجل إذا غرم حدَّث فكذَب ووعدَ فأخلَف».
নিশ্চয় ব্যক্তি যখন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েতখন সে মিথ্যা বলে ও ওয়াদা ভঙ্গ করে[169]
দুই. আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেনহে আল্লাহর রাসূল আমাকে একটি দোয়া শিক্ষা দেনযা দিয়ে আমি সালাতে দোয়া করবতিনি বলেনতুমি বল:[170]
«اللهم إني ظلمت نفسي ظلمًا كثيرًا، ولا يغفر الذنوب إلا أنت، فاغفر لي مغفرة من عندك، وارحمني إنك أنت الغفور الرحيم»؛
মুসলিমের বর্ণনায় আছেআমাকে একটি দো‘আ শিক্ষা দেনযা দিয়ে আমি আমার ঘরে ও সালাতে দোয়া করব।[171]
তিন. আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঅতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহুদ ও সালামের মাঝখানে বলতেন[172]:
«اللهم اغفر لي ما قدَّمْتُ، وما أخَّرتُ، وما أسررْتُ، وما أعلنتُ، وما أنت أعلمُ به مني، أنت المقدِّم، وأنت المؤخِّر، لا إله إلا أنت»؛
চার.
«اللهم إني أعوذ بك من البخل، وأعوذ بك من الجبن، وأعوذ بك [من] أن أُردّ إلى أرذل العمر، وأعوذ بك من فتنة الدنيا، وأعوذ بك من عذاب القبر»؛
সাদ ইব্‌ন আবু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি নিজ বাচ্চাদের উপরোক্ত শব্দগুলো শিক্ষা দিতেনযেমন তাদেরকে লেখা পড়া শিখানো হয় এবং তিনি বলতেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের পর এসব জিনিস থেকে পানাহ চাইতেন।[173]
পাঁচ. মু‘য়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত ধরে বলেন, “হে মু‘য়ায আল্লাহর শপথ আমি তোমাকে মহব্বত করিআল্লাহর শপথ আমি তোমাকে মহব্বত করি। তিনি বলেন : আমি তোমাকে ওসিয়ত করছিতুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে এ দো‘আ পড়া ত্যাগ করবে না:
«اللهم أعني على ذكرك، وشكرك، وحسن عبادتك»
ছয়.
«اللهم إني أسألك الجنة وأعوذ بك من النار»؛
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতএক ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তুমি সালাতে কি বল?” সে বলল: আমি তাশাহুদ পড়িঅতঃপর আল্লাহর নিকট জান্নাতের প্রার্থনা করি ও জাহান্নাম থেকে পানাহ চাই। তিনি বললেন: তোমার দো‘আ খুব সুন্দর। আমরাও অনুরূপ দোয়া করব।[174]
সাত.
«اللهم إني أسألك يا الله بأنك الواحد،الأحد، الصمد،الذي لم يلد ولم يولد،ولم يكن له كفوًا أحد،أن تغفر لي ذنوبي إنك أنت الغفور الرحيم»؛
মিহজান ইব্‌ন আদরা থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করেনঅতঃপর এক ব্যক্তিকে দেখেন যে সালাত শেষ করে তাশাহুদ পড়তে ছিল এবং উপরোক্ত দো‘আ বলেছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে”, তিনবার বলেন।[175]
আট.
«اللهم إني أسألك بأن لك الحمد، لا إله إلا أنت وحدك لا شريك لك، المنان، بديع السموات والأرض، يا ذا الجلال والإكرام، يا حي يا قيوم إني أسألك...]؛
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বসা ছিলেন আর অপর এক ব্যক্তি সালাত পড়তে ছিলঅতঃপর সে উপরোক্ত দোয়া করে। ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: সে আল্লাহর ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করেছেযে নামের মাধ্যমে দো‘আ করলে কবুল করা হয়যার প্রার্থনা করলে ডাকে সাড়া দেয়া হয়[176]
নয়.
«اللهم إني أسألك بأني أشهد أنك أنت الله لا إله إلا أنت، الأحد، الصمد، الذي لم يلد ولم يولد، ولم يكن له كفوًا أحد»؛
বুরাইদাহ থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে উপরোক্ত দোয়া বলতে শোনেনঅতঃপর তিনি বলেন: যার হাতে আমার নফস তার শপথসে আল্লাহর ইসমে আজমের মাধ্যমে দো‘আ করেছেযে নামের মাধ্যমে দো‘আ করলে কবুল করা হয় এবং যে নামের মাধ্যমে প্রার্থনা করলে প্রদান করা হয়[177]
দশ.
«اللهم بعلمك الغيب، وقدرتك على الخلق، أحيني ما علمت الحياة خيرًا لي، وتوفني إذا علمت الوفاة خيرًا لي، اللهم إني أسألك خشيتك في الغيب والشهادة، وأسألك كلمة الحق في الرضى والغضب، وأسألك القصد في الغنى والفقر، وأسألك نعيمًا لا ينفدُ، وأسألك قرة عين لا تنقطع، وأسألك الرضا بعد القضاء، وأسألك بَرْدَ العيش بعد الموت، وأسألك لذة النظر إلى وجهك، والشوق إلى لقائك في غير ضراء مُضرَّة ولا فتنة مُضلَّة، اللهم زيِّنا بزينة الإيمان، واجعلنا هداةً مهتدين»؛
আম্মারের হাদিসে আছেতিনি তার সাথীদের সাথে খুব সংক্ষেপে সালাত আদায় করেন। উপস্থিত কেউ তাকে বলল: আপনি সালাত খুব সংক্ষেপ করলেন অথবা হালকা সালাত আদায় করলেন। তিনি বললেন: কিন্তু আমি এখানে এমন শব্দ দ্বারা দোয়া করেছিযা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করেছিঅতঃপর তিনি উপরোক্ত দো‘আ বলেন।
এখানে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ চেয়ে যা ইচ্ছা দো‘আ করবে। যদি কেউ পিতা-মাতা ও অন্যান্য মুসলিমদের জন্য দো‘আ করেতাতেও কোন সমস্যা নেইহোক সালাত ফরয কিংবা নফল। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইব্‌ন মাসউদকে তাশাহুদ শিক্ষা দিয়ে বলেন: অতঃপর পছন্দ মত দো‘আ করবে[178] এর দ্বারা বুঝা যায়দুনিয়া ও আখেরাতের সকল কল্যাণ সালাতে প্রার্থনা করা যায়।[179]

২৬. অতঃপর ডান দিকে ও বাম দিকে সালাম ফিরাবে এ বলে:
«السلام عليكم ورحمة الله، السلام عليكم ورحمة الله»؛
জাবের ইব্‌ন সামুরা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছেতিনি বলেন: আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করতাম বলতাম:
السلام عليكم ورحمة الله، السلام عليكم ورحمة الله
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: চতুর ঘোড়ার লেজের ন্যায় তোমরা হাত দ্বারা কিসের দিকে ইশারা কররানের উপর হাত রেখে ডানে ও বামে তোমাদের ভাইদের সালাম দেয়াই যথেষ্ট[180]
আমের ইব্‌ন সাদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেনতিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখতামতিনি ডানে ও বামে সালাম ফিরাতেনএমন কি আমি তার গালের শুভ্রতা দেখতে পেতাম[181] অতঃপর সে ডানে অথবা বামে যে কোন দিকেই ঘুরতে পারে।[182]

২৭. সালাত যদি তিন রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন মাগরিব অথবা চার রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন জোহরআসর ও এশা। তাহলে শুধু প্রথম তাশাহুদ পড়বেতবে উত্তম হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পড়াযেমন ইতিপূর্বে বর্ণনা করেছি। অতঃপর পা ও হাটুর সম্মুখভাগ এবং রানের উপর ভর দিয়ে তাকবির বলে দাঁড়াবেউভয় হাত কান অথবা কাঁধ পর্যন্ত উঠাবেযেমন পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে।[183] দ্বিতীয়ত আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমরের হাদিসে আছে: যখন দুরাকাত থেকে উঠবে উভয় হাত উঠাবে[184] আবু হুমাইদ থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: অতঃপর যখন দুরাকাত থেকে উঠবে তাকবির বলবে ও উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে যেমন সালাতের শুরুতে উঠিয়েছিলঅতঃপর অবশিষ্ট সালাতে অনুরূপ করতে থাকবে[185] এবং উভয় হাত বুকের উপর রাখবে। কারণ ওয়ায়েল ইব্‌ন হুজরের হাদিসে আছে: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছিযখন তিনি সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় থাকতেন ডান হাত দ্বারা বাম হাত পাকড়াও করতেন[186] অতঃপর আস্তে সূরা ফাতেহা পড়বে। যদি জোহরের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে কখনো ফাতের চেয়ে অতিরিক্ত পড়ে তবে কোন সমস্যা নেই।[187] মাগরিবের তৃতীয় রাকাত এবং জোহরআসর ও এশার তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত পূর্বে বর্ণিত দ্বিতীয় রাকাতের ন্যায় পড়বে। কারণ সালাতে ভুলকারী ব্যক্তিকে প্রথম রাকাত শিক্ষা দিয়ে বলেন: অতঃপর তুমি পূর্ণ সালাতে অনুরূপ কর[188]

২৮. দ্বিতীয় তাশাহুদে তাওয়াররুক করে বসবে। আবু হুমাইদ সায়েদির হাদিসে আছে: যখন দ্বিতীয় রাকাতে বসবেতখন বাম পায়ের উপর বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে। যখন শেষ রাকাতে বসবেবাম পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া রাখবে ও নিতম্বের উপর বসবে[189] এটাই তাওয়াররুক বসা।

২৯. মাগরিবের তৃতীয় রাকাতে এবং জোহরআসর ও এশার চতুর্থ রাকাতে তাশাহুদের সাথে দরূদ পড়বেযেমন পূর্বে বিস্তারিত বলা হয়েছে।

৩০. ডান দিকে ও বাম দিকে এ বলে সালাম দিবে:
السلام عليكم ورحمة الله، السلام عليكم ورحمة الله.

৩১. সালাম শেষে নিম্ন বর্ণিত আযকার ও দো‘আ পড়বে:
এক.
«أستغفر الله، أستغفر الله، أستغفر الله، اللهم أنت السلام ومنك السلام، تباركت يا ذا الجلال والإكرام»؛
সাওবান থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে তিনবার ইস্তেগফার করতেন এবং বলতেন[190]:
«اللهم أنت السلام...» الحديث.
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরিয়ে নিম্নের দোয়া পরিমাণ বসতেন[191]:
«اللهم أنت السلام ومنك السلام، تباركت يا ذا الجلال والإكرام»،
এর দ্বারা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার উদ্দেশ্য হচ্ছে তিনি এ দো‘আ পরিমাণ কিবলামুখী থাকতেনঅতঃপর মানুষের দিকে চেহারা ফিরাতেন। যেমন সামুরা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে আমাদের দিকে তার চেহারা ঘুরাতেন[192]
দুই.
«لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير»
তিনবার। কারণ মুগিরা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: মুয়াবিয়া মুগিরার নিকট এ মর্মে পত্র লেখেন যেআমাকে এমন একটি হাদিস শোনান যা আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শোনেছেনতিনি লিখেন: আমি তাকে সালাত শেষে বলতে শোনেছি:
«لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك، وله الحمد، وهو على كل شيء قدير»
তিনবার। তিনি আরো বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতিরিক্ত প্রশ্ন করাসম্পদ নষ্ট করামায়ের অবাধ্য হওয়া ও মেয়েদের জীবিত দাফন করা থেকে নিষেধ করতেন।[193]
তিন.
«لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد [يحيي ويميت، وهو حي لا يموت، بيده الخير][194] وهو على كل شيء قدير، اللهم لا مانعَ لما أعطيتَ، ولا مُعطيَ لما منعتَ [ولا رادّ لما قضيتَ][195] ولا ينفع ذا الجدِّ منك الجدُّ»؛
মুগিরা ইব্‌ন শোবা মুয়াবিয়া ইব্‌ন আবু সফিয়ানের নিকট লেখেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতের পর বলতেন[196]«لا إله إلا الله وحده لا شريك له...»
চার.
«لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك، وله الحمد وهو على كل شيء قدير، لا حول ولا قوة إلا بالله، لا إله إلا الله، ولا نعبد إلا إياه، له النعمة، وله الفضل، وله الثناء الحسن، لا إله إلا الله مخلصين له الدين ولو كره الكافرون»؛
আব্দুল্লাহ ইব্‌ন জুবায়েরের হাদিসে আছেতিনি প্রত্যেক সালাতের সালাম শেষে এগুলো বলতেনঅতঃপর বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে প্রত্যেক সালাতের পর তাহলিল পড়তেন[197]
পাঁচ.
«سبحان الله، والحمد لله، والله أكبر (ثلاثًا وثلاثين) لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد، وهو على كل شيء قدير»؛
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক সালাতের পর ৩৩বার আল্লাহর তাসবিহ পড়ে৩৩বার আল্লাহর তাহমিদ পড়ে৩৩বার আল্লাহর তাকবির পড়েএ হচ্ছে ৯৯বারএবং একশত বারে বলে:
لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير،
তার সকল পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবেযদিও সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়[198]
বিভিন্ন প্রকারের তাসবিহতাহমিদ ও তাকবির বর্ণিত আছেমুসলিমদের উচিত সবগুলোই পড়াএক সালাতের পর এটা পড়াআবার অন্য সালাতের পর অন্যটা পড়া। কারণ এতে অনেক উপকার বিদ্যমান: সুন্নতের অনুসরণসুন্নত জীবিত করণ ও অন্তরের উপস্থিতি।[199]
নিম্নে কতক তাসবিহতাহমিদ ও তাকবিরের দেয়া হল:
প্রথম প্রকার: সুবহানাল্লাহ ৩৩বারআল-হামদুলিল্লাহ ৩৩বারআল্লাহু আকবার ৩৩বারএবং শেষে বলবে:
«لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير»
এভাবেই একশত পুরো হবেযেমন পূর্বে আবু হুরায়রার হাদিসে রয়েছে।[200]
দ্বিতীয় প্রকার: সুবহানাল্লাহ ৩৩বারআল-হামদুলিল্লাহ ৩৩বার ও আল্লাহু আকবার ৩৪বারএভাবে একশত পুরো হবে। কাব ইব্‌ন আজুরা থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: সালাতের পর কিছু তাসবিহ আছেযার পাঠকারীরা কখনো বঞ্চিত হয় না৩৩বার তাসবিহ৩৩বার তাহমিদ ও ৩৪বার তাকবির[201]
তৃতীয় প্রকার: সুবহানাল্লাহআল-হামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার ৩৩বার করে ৯৯বার আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতগরিব মুহাজিরগণ রাসূলের নিকট এসে বলে: সম্পদশালীরা তো তাদের সম্পদের মাধ্যমে মহান মর্যদা ও জান্নাতের মালিক হয়ে যাচ্ছেতিনি বললেন: কিভাবে?” তারা বলল: আমরা যেরূপ সালাত আদায় করিতারাও সেরূপ সালাত আদায় করেআমরা যেরূপ সিয়াম পালন করিতারাও সেরূপ সিয়াম পালন করেতাদের অতিরিক্ত ফজিলত হচ্ছে তারা তাদের সম্পদ দ্বারা হজ করেওমরা করেজিহাদ করে ও সদকা করে। তিনি বললেন: আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু শিক্ষা দেবযার মাধ্যমে তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের নাগাল পাবে ও পরবর্তীদের অতিক্রম করে যাবেতোমাদের চেয়ে উত্তম কেউ হবে নাতবে যারা তোমাদের ন্যায় আমল করে তারা ব্যতীত?” তারা বলল: অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূলতিনি বললেন: তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর ৩৩বার তাসবিহ৩৩বার তাকবির ও ৩৩বার তাহমিদ পড়বে গরিব মুহাজিরগণ ফিরে এসে বলেআমাদের সম্পদশালী ভাইয়েরা আমাদের আমল জেনে তারাও অনুরূপ আমল আরম্ভ করেছেতিনি বললেন: এটা আল্লাহর অনুগ্রহযাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন[202]
চতুর্থ প্রকার: সুবহানাল্লাহ ১০বারআল-হামদুলিল্লাহ ১০বার এবং আল্লাহু আকবার ১০বার। আব্দুল্লাহ ইব্‌ন আমর থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: দুটি স্বভাব যে কোন মুসলিম আয়ত্ব করবেসে জান্নাতে প্রবেশ করবেযা খুবই সহজ কিন্তু তার উপর আমলকারীর সংখ্যা খুব কম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: পাঁচ ওয়াক্ত সালাতপ্রত্যেক সালাতের পর ১০বার তাসবিহ১০বার তাহমিদ ও ১০বার তাকবির বলবে। এভাবে মুখে ১৫০বার উচ্চারণ করা হবেকিন্তু মিজানে তার ওজন হবে ১৫০০ বলার[203] আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাত দিয়ে গুনতে দেখি। যখন তোমাদের কেউ শুতে বিছানায় যাবে ৩৩বার তাসবিহ পড়বে৩৩বার তাহমিদ পড়বে ও ৩৪বার তাকবির পড়বেএভাবে মুখে ১০০বার হলেও মিজানে তার ওজন হবে ১০০০বার। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমাদের এমন কে আছেযে দিনে দুই হাজার পাঁচ শত পাপ করে?” তাকে বলা হল: আমরা তাহলে এগুলো কেন পড়ব নাতিনি বললেন: তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকেতখন শয়তান আগমন করে বলে: এটা স্মরণ করওটা স্মরণ করএবং ঘুমের সময় আসে অতঃপর তাকে ঘুম পারিয়ে দেয় ইব্‌ন মাজার শব্দ এরূপ: শয়তান তাকে ঘুম পারানো চেষ্টা করেঅবশেষে সে ঘুমিয়ে যায়[204] আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি মারফূ হাদিসে আছে: প্রত্যেক সালাতের পর ১০বার তাসবিহ পড়বে১০বার তাহমিদ পড়বে ও ১০বার তাকবির বলবে[205]
পঞ্চম প্রকার: ১১বার তাসবিহ১১বার তাহমিদ ও ১১বার তাকবির। সুহাইল তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন: ১১১১ ও ১১ সব মিলে ৩৩বার[206]
ষষ্ট প্রকার:
«سبحان الله، والحمد لله، ولا إله إلا الله،والله أكبر»
সবগুলো তাসবিহ ২৫বার বলবে। যেমন যায়েদ ইব্‌ন সাবেত ও ইব্‌ন ওমরের হাদিসে এসেছে।[207]

সপ্তম প্রকার:
আয়াতুল কুরসি পড়বে:
﴿ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَيُّ ٱلۡقَيُّومُۚ لَا تَأۡخُذُهُۥ سِنَةٞ وَلَا نَوۡمٞۚ لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ أَيۡدِيهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيۡءٖ مِّنۡ عِلۡمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۖ وَلَا يَ‍ُٔودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ ٢٥٥﴾[البقرة:255 ]
আবু উমামা থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পড়বেমৃত্যু ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ করার আর কোন বাঁধা তার থাকবে না তাবরানি এর সাথে সূরা ইখলাসকেও সংযুক্ত করেছেন।[208]
অষ্টম প্রকার: প্রত্যেক সালাতের পর সূরা ইখলাসসূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে। কারণ, উকবা ইব্‌ন আমের বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রত্যেক সালাতের পর এগুলো পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন[209]
নবম প্রকার: ফজর ও মাগরিবের সালাতের পর ১০বার করে পড়বে:
«لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك، وله الحمد، يحيي ويميت [بيده الخير][210] وهو على كل شيء قدير»
 কারণ আবু জরমু‘য়াযআবু আইয়াশ জারকিআবু আইয়ূবআব্দুর রহমান ইব্‌ন গুনম আশ‘আরিআবু দারদাআবু উমামা ও উমারাহ ইব্‌ন শাবিব সাবায়ি থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।[211] এদের সকলের হাদিসের সারমর্ম হচ্ছেযে ব্যক্তি মাগরিব অথবা ফজর সালাতের পর দশবার বলবেআল্লাহ তার জন্য এমন প্রহরী প্রেরণ করবেনযে তাকে শয়তান থেকে হিফাযত করবে সকাল পর্যন্ত এবং সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবেসে ঐ দিন সকল অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবেআল্লাহ তার জন্য দশটি নেকি লিখবেন ও তার দশটি পাপ মোচন করবেনএগুলো তার জন্য দশজন মুমিন দাসির বরাবর হবেআল্লাহর সাথে শিরক ব্যতীত অন্য কোন পাপ সে দিন তাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারবে না। সেই সবচেয়ে উত্তম আমলকারী হিসেবে গণ্য হবেযদি কেউ তার চেয়ে উত্তম বাক্য না বলে।
দশম প্রকার: ফজর সালাত শেষে বলবে:
اللهم إني أسألك علمًا نافعًا، ورزقًا طيبًا، وعملاً مُتَقَبَّلاً
উম্মে সালমা থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর সালাতের সালাম শেষে উপরোক্ত দোয়া পড়তেন।[212]
এগারতম প্রকার: বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনআমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করতামতখন তার ডান পাশে দাঁড়াতে পছন্দ করতামতিনি আমাদের দিকে মুখ করে বসতেন। তিনি বলেন: আমি তাকে বলতে শোনেছি[213]:
«ربِّ قني عذابك يوم تبعث عبادك أو تجمع عبادك».
বারোতম প্রকার: ফরয সালাত শেষে উচ্চ স্বরে আজকার পড়া সুন্নত। কারণ ইব্‌ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: তাকবিরের মাধ্যমেই আমরা জানতাম রাসূলুল্লাহ সালাত শেষ করেছেন[214] বুখারি বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ফরয সালাত শেষে উচ্চ স্বরে যিকির করার নিয়ম ছিল[215] ইব্‌ন হাজার রহ. বলেন: উচ্চ স্বরে জিকির এর উদ্দেশ্য তারা উচ্চ স্বরে তাকবির বলতেনঅর্থাৎ তারা তাসবিহ ও তাহমিদের পূর্বে তাকবির বলতেন[216] এ ব্যাখ্যাকে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস আরো স্পষ্ট করে যেআবু সালেহ বলেছেন: আল্লাহু আকবারসুবহানাল্লাহ ও আল-হামদুলিল্লাহ সবগুলোই ৩৩বার করে পড়বে,[217] তিনি তাকবির দ্বারা আরম্ভ করেছেন।
৩২. সুনানে রাওয়াতিবগুলো পড়বে। কারণ, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও ফজরের পূর্বে দুরাকাত কখনো ত্যাগ করতেন না[218] উম্মুল মুমিনিন উম্মে হাবিবা বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শোনেছি: যে ব্যক্তি দিন ও রাতে বার রাকাত সালাত পড়বেএর পরিবর্তে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন। অপর বর্ণনায় আছেএমন কোন মুসলিম বান্দা নেই যে প্রতি দিন বার রাকাত নফল সালাত আদায় করেকিন্তু আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন নাঅথবা তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করা হবে না[219] এর ব্যাখ্যায় ইমাম তিরমিযি বাড়িয়ে বলেন: চার রাকাত জোহরের পূর্বে ও দুরাকাত জোহরের পরদুরাকাত মাগরিবের পরদুরাকাত এশার পর ও দুরাকাত ফজরের পূর্বে[220]
আব্দুল্লাহ ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দশ রাকাত মুখাস্ত করেছি: দুরাকাত জোহরের পূর্বে ও দুরাকাত জোহরের পরমাগরিবের পর দুরাকাত তার ঘরেএশার পর দুরাকাত তার ঘরে এবং ফজরের পূর্বে দুরাকাত অপর বর্ণনায় আছে: জুমার পর দুরাকাত তার ঘরে[221]
অতএব, সুনানে রাওয়াতেব দশ রাকাতযেমন ইব্‌ন ওমর বলেছেনঅথবা বার রাকাত যেমন উম্মে হাবিবা ও আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেছেন। আমাদের শায়খ আল্লামা ইব্‌ন বাযকে বলতে শোনেছি: যারা ইব্‌ন ওমরের হাদিস গ্রহণ করেছেতারা বলে সুন্নত দশ রাকাতআর যারা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদিস গ্রহণ করেতারা বলে সুন্নত বারো রাকাত। ইমাম তিরমিযির ব্যাখ্যা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসকে শক্তিশালী করেআর উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিস এসব সুন্নতের ফযিলত বর্ণনা করে। হয়তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো বার রাকাত পড়েছেনযেমন আয়েশা ও উম্মে হাবিবার হাদিসে আছেকখনো দশ রাকাত পড়েছেনযেমন ইব্‌ন ওমর থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে। যখন আগ্রহ ও স্পৃহা থাকে বারো রাকাত পড়বেআর যখন ব্যস্ততা থাকে দশ রাকাত পড়বে। তবে সবগুলো সুন্নতে রাওয়াতেবহ্যাঁ পূর্ণতা হচ্ছে আয়েশা ও উম্মে হাবিবার হাদিস মোতাবিক বারো রাকাত পড়া[222]
যদি কোন মুসলিম জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও জোহরের পর চার রাকাত পড়ার ইচ্ছা করে আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেবেন। যেমন উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শোনেছিতিনি বলেন: যে ব্যক্তি জোহরের পূর্বে চার রাকাত ও জোহরের পর চার রাকাত নিয়মিত পড়বেআল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুনের জন্য হারাম করে দেবেন[223]
যদি কোন মুসলিম আসরের পূর্বে চার রাকাত পড়ার ইচ্ছা করেআল্লাহ তার উপর রহম নাজিল করবেন। ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«رحم الله امرءًا صلى أربعًا قبل العصر»
আল্লাহ সে ব্যক্তির উপর রহম করুনযে আসরের পূর্বে চার রাকাত সালাত আদায় করল[224]

সমাপ্ত


[1] বুখারিকিতাবুল আযান: (৬৩১)
[2] সূরা মায়েদা: (৬)
[3] মুসলিম: (২২৪)
[4] সূরা বাকারা: (১৪৪)
[5] বুখারি: (৭৯৩)মুসলিম: (৩৯৭)
[6] হাকেম: (১/২৫২)তাবরানি ফিল কাবির: (৭/১১৪)হাদিস নং: (৬৫৩৯)আহমদ: (৩/৪০৪), “মাজমাউজ জাওয়াদে” লিল হায়সামি: (২/৫৮)
[7] মুসলিম: (৫১০)
[8] আবু দাউদ: (৬৯৮)আলবানী সহিহ আবু দাউদে (১/১৩৫) বলেনহাদিসটি হাসান ও সহিহ। লেখক বলেন: আমি শোনেছি শায়খ ইব্‌ন বাজ রাহিমাহুল্লাহ বুলুগুল মারাম’ এর (২৪৪) নং হাদিসের টিকায় বলেন: এ হাদিসের সনদ খুবই সুন্দরএ হাদিস দ্বারা সুতরা ও তার নিকটবর্তী হয়ে সালাত আদায়ের গুরুত্ব প্রমাণি হয়
[9] বুখারি: (৪৯৬)মুসলিম: (৫০৮), “সুবুলুস সালাম” লি সানআনি : (২/১৪৫)
[10] বুখারি: (৫০৯)মুসলিম: (৫০৫)
[11] মুসলিম: (৫০৬)লেখক বলেন: আল্লামা ইব্‌ন বাজকে আমি বুলুগুল মারাম” এর (২৪৮) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যেযখন কোন ব্যক্তি মুসল্লি ও তার সুতরার মধ্য দিয়ে যেতে চায়তখন মুসল্লির জন্য বৈধ রয়েছে তাকে প্রতিহত করা। অন্যান্য হাদিস দ্বারা বুঝা যায়মুসল্লি তার সামনে দিয়ে অতিক্রমকারীকে বাঁধা দিবেতার সামনে সুতরাং থাক বা না থাকতবে দূর দিয়ে অতিক্রম করলে ভিন্ন কথা। আর অতিক্রমকারীকে সহজতর পদ্ধতি দ্বারা প্রতিরোধ করবেযেমন উটের বাচ্চাকে প্রতিরোধ করা হয়
[12] বুখারি: (৫১০)মুসলিম: (৫০৭)
[13] বুখারি: (৪৯৩)মুসলিম: (৫১৪)
[14] বুখারির (৪৯৩) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় রিয়াদে অবস্থিত জামে সারায় ১০/০৬/১৪১৯হি. তারিখে আমি তার এ বক্তব্য শ্রবণ করি
[15] বুখারি: (৭৯৩)মুসলিম: (৩৯৭)
[16] সূরা বাকারা: (২৩৮)
[17] বুখারি: (১১১৭)
[18] বুখারি: (১)মুসলিম: (১৯০৭)
[19] বুখারি: (৭৩৫) ও (৭৩৯)মুসলিম: (৩৯০)
[20] বুখারি: (৭৩৭)মুসলিম: (৩৯১)
[21] মুসলিম: (৩৯০)
[22] বুখারি: (৭৩৭)মুসলিম: (৩৯১)
[23] বুখারি: (৭৩৭)মুসলিম: (৩৯১)
[24] বুখারি: (৭৩৮)মুসলিম: (৩৯০)
[25] দেখুন: ফাতহুল বারি লি ইব্‌ন হাজার: (২/৩২৮)সুবুলুস সালাম: (২/২১৭)
[26] সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকি: (২/২৮৩), (৫/১৫৮)হাকেম: (১/৪৭৯)হাকেম হাদিসটি সহিহ বলেছেন এবং জাহাবি তার সমর্থন করেছেন। আহমদ: (২/২৯৩)আলবানী তার সিফাতুস সালাত” গ্রন্থে অনুরূপ হাদিসকে সহিহ বলেছেন।
[27] মুসলিম: (৪২৯)
[28] সহিহ ইব্‌ন খুজাইমাহ: (১/২৪৩)হাদিস নং: (৪৭৯)লেখক বলেন: আমি আল্লামা ইব্‌ন বাজ রহ.কে বুলুগুল মারামের (২৯৩) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: ইমাম আহমদও কুবাইসা সূত্রে তার পিতার সনদে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উভয় হাত বুকের উপর রাখতেনএ হাদিসের সনদ হাসান
[29] নাসায়ি: (৮৮৭)আলবানী সুনানে নাসায়িতে হাদিসটি সহিহ বলেছেন: (১/১৯৩)
[30] শারহুল মুমতি”: (৩/৪৪)
[31] বুখারি: (৭৪০)
[32] বুলুগুল মারামের (২৯৩) নং হাদিসের ব্যাখ্যার সময় আমি এ কথা শোনেছি।
[33] বুখারি: (৭৪৩)মুসলিম: (৫৯৮)
[34] মুসলিম: (৩৯৯)মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক: (২৫৫৫-২৫৫৭)ইব্‌ন আবি শায়বাহ: (১/২৩০), (২/৫৩৬)ইব্‌ন খুজাইমাহ: (৪৭১)হাকেম: (১/২৩৫)হাকেম হাদিসটি সহিহ বলেছেন এবং ইমাম জাহাবি তার সমর্থন করেছেন। ইব্‌ন তাইমিয়া বলেন: ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এ দোয়াটি উচ্চস্বরে পড়ে মানুষদের শিক্ষা দিতেন। যদি এটা স্বীকৃত সুন্নত না হততিনি তা করতেন নাঅন্যান্য মুসলিমরাও তা মেনে নিতেন না দেখুন: কায়েদা ফিল ইস্তেফতাহ: (পৃ.৩১)যাদুল মায়াদ লি ইব্‌ন কাইয়িম: (১/২০২-২০৬)ইমাম আহমদ দশটি কারণে সালাতের শুরুতে ওমর থেকে বর্ণিত হাদিসটি গ্রহণ করেছেন। দেখুন: যাদুল মা‘য়াদ: (১/২০৫)লেখক বলেন: আমি ইমাম আব্দুল আযিয ইব্‌ন বায রহ.কে রাওজুল মুরবি” (২/২৩) গ্রন্থের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: এ হাদিসটি এক দল সাহাবি থেকে বর্ণিত। আমি (লেখক) বলছি: এ হাদিসটি আবু বকরওমরউসমানআয়েশাআনাসআবু সাঈদ ও আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ বর্ণনা করেছেনএ দো‘আর মাধ্যমে ওমরআবু বকর ও উসমান তাদের সালাত আরম্ভ করতেন। দেখুন: আল-মুনতাকা মাআ নাইলুল আওতার”: (১/৭৫৬)
[35] মুসলিম: (৭৭১)
[36] ইব্ তাইমিয়া রহকায়েদাহ ফি আনওয়ায়িল ইস্তেফতাহ” (পৃ.৩১গ্রন্থে উল্লেখ করেনসালাত আরম্ভ করার দোয়া «سبحانك اللهم বা «وجهت وجهي বা  ধরণের অন্য কোন দোয়ার সাথে খাস নয়বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্নিত যে কোন দোয়ার মাধ্যমেই সালাত আরম্ভ করা যায়তবে কোনটি পড়া বেশী উত্তম এটা প্রমাণিত হয় অন্য দলিলের ভিত্তিতে। আমি (লেখকআল্লামা আব্দুল আযীয ইব্ বায রহ.কে বুলুগুল মারাম” এর (২৮৭নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছিসালাত আরম্ভ করার একটি দোয়াই যথেষ্টএকাধিক দোয়া এক সাথে পড়বে নানফল সালাতে যে দোয়া পড়া বৈধফরজ সালাতেও তা পড়া বৈধতবে যেসব দোয়া লম্বা তা রাতের সালাতে পড়াই উত্তম আমরা এখানে সালাত আরম্ভ করার আরো কিছু দোয়া উল্লেখ করছি:
চার. আব্দুর রহমান ইব্‌ন আউফ বলেনআমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করিকোন দোয়ার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের সালাত আরম্ভ করতেনতিনি বলেন: তিনি যখন রাতে সালাতের জন্য উঠতেনতখন তিনি নিম্নের দোয়া দ্বারা সালাত আরম্ভ করতেন:
«اللهم ربَّ جبرائيل وميكائيل وإسرافيل،فاطر السموات والأرض، عالم الغيب والشهادة، أنت تحكم بين عبادك فيما كانوا فيه يختلفون، اهدني لما اختلف فيه من الحق بإذنك إنك تهدي من تشاء إلى صراط مستقيم».
হে আল্লাহ তুমি জিবরাঈলমিকাঈল ও ইসলাফিলের রবআসমান ও যমীন সৃষ্টিকারীদৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানের অধিকারীতুমিই বান্দাদের বিতর্কিত বিষয়ে ফয়সালা প্রদানকারী। মানুষের বিতর্কিত বিষয়ে তুমি আমাকে সঠিক পথের দিশা দান করুননিশ্চয় তুমি যাকে ইচ্ছা কর সঠিক পথের দিশা প্রদান কর। মুসলিম: (৭৭১)
পাঁচ. আনাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিতএক ব্যক্তি সালাতের কাতারে অনুপ্রবেশ করেযখন নিশ্বাস তাকে কাবু করে ফেলেছিলসে বলে:
«الحمد لله حمدًا كثيرًا طيبًا مباركًا فيه»
আল্লাহর জন্য অধিকপবিত্র ও বরকতময় প্রশংসা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আমি দেখেছি বারো জন ফেরেশতা এর সাওয়াব উঠিয়ে নেয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করছে মুসলিম: (৬০০)
ছয়. ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাথে সালাত আদায় করতেছিলামআমাদের থেকে একজন বলল:
«الله أكبر كبيرًا، والحمد لله كثيرًا، وسبحان الله بكرة وأصيلاً»
আল্লাহ মহানতার জন্য অগণিত প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যায় তারই পবিত্রতা: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এ দোআ শোনে আমি আশ্চর্য হলামএর জন্য আসমানের দ্বার খুলে দেয়া হয়েছে: (৬০১)
সাত. আসেম ইব্‌ন হুমাইদ বলেনআমি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করেছিরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের সালাত কিসের মাধ্যমে আরম্ভ করতেনতিনি বলেন: তুমি আমাকে এমন একটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছযার সম্পর্কে তোমার পূর্বে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করেনিতার অভ্যাস ছিল দাঁড়িয়ে, “দশবার তাকবির বলতেনদশবার তাহমিদ তথা আল-হাদুল্লিাহ বলতেনদশবার তাসবিহ তথা সুবহানাল্লাহ বলতেনদশবার তাহলিল তথা লাইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার বলতেনদশবার ইস্তেগফার বলতেনঅতঃপর বলতেন:
اللهم اغفر لي، واهدني، وارزقني، وعافني، أعوذ بالله من ضيق المقام يوم القيامة».
হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা করআমাকে হিদায়াত করআমাকে রিযক দান করআমাকে আফিয়াত তথা নিরাপত্তা দান করআমি আল্লাহর নিকট কিয়ামতের দিন সংকীর্ণতা থেকে পানাহ চাচ্ছি। আবু দাউদ: (৭৬৬)নাসায়ি: (১৬১৭)আহমদ: (৬/১৪৩)এ হাদিসটি আলবানী সিফাতুস সালাত” (৮৯) ও সহিহ আবু দাউদে” (১/১৪৬) সহিহ বলেছেন।
আট. ইব্‌ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তাহাজ্জুতের জন্য উঠে বলতেন:
«اللهم لك الحمد، أنت نور السموات والأرض ومن فيهن، ولك الحمد أنت قيِّم السموات والأرض ومن فيهن [ولك الحمد أنت رب السموات والأرض ومن فيهن] [ولك الحمد لك ملك السموات والأرض ومن فيهن] [ولك الحمد أنت ملك السموات والأرض] [ولك الحمد] [أنت الحقُّ، ووعدك الحق، وقولك الحق، ولقاؤك الحق، والجنة حق، والنار حق، والنبيون حق، ومحمد ﷺ حق، والساعة حق] [اللهم لك أسلمت، وعليك توكلت، وبك آمنت، وإليك أنبت، وبك خاصمت، وإليك حاكمت، فاغفر لي ما قدَّمتُ، وما أخَّرْتُ، وما أسررْتُ، وما أعلنتُ] [أنت المقدِّم، وأنت المؤخِّر، لا إله إلا أنت] [أنت إلهي لا إله إلا أنت]،
হে আল্লাহ সকল প্রশংসা তোমার জন্যতুমি আসমান-যমীন ও উভয়ের মধ্যবর্তী নূরতোমার জন্যই সকল প্রশংসাতুমি আসমান-যমীন ও উভয়ের মধ্যে বিদ্যমান সকল বস্তুর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণকারীতোমার জন্য সকল প্রশংসাতুমি আসমান-যমীন ও উভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর মালিকতোমার জন্য সকল প্রশংসাতুমি আসমান ও যমীনের প্রভুতোমার জন্য সকল প্রশংসাতুমিই সত্যতোমার ওয়াদা সত্যতোমার কথা সত্যতোমার সাক্ষাত সত্যজান্নাত সত্যজাহান্নাম সত্যনবীগণ সত্যমুহাম্মদ সত্যকিয়ামত সত্যহে আল্লাহ তোমার নিকট আত্ম সমর্পণ করলামতোমার উপর তাওয়াক্কুল করলামতোমার উপরই ঈমান আনয়ন করলামতোমার দিকেই মনোনিবেশ করলামতোমার মাধ্যমেই আমি তর্ক করি এবং তোমার নিকটই আমি ফয়সালা চাইঅতএব তুমি আমার অগ্র-পশ্চাৎদৃশ্য ও অদৃশ্য সকল পাপ মোচন করতুমিই আদি এবং তুমিই অন্ত। তুমি আমার ইলাহতুমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। বুখারি: (৬৩১৭), (৭৩৮৫), (৭৪৪২), (৭৪৯৯)মুসলিম: (৭৬৯)আরো দো‘আর জন্য দেখুন: যাদুল মায়াদ”: (১/২০২-২০৭)
[37] সূরা নাহল: (৯৮)
[38] আহমদ: (৩/৫০)আবু দাউদ: (৭৭৫)তিরমিযি: (২৪২) ইত্যাদি।
[39] আহমদ: (৩/২৬৪)নাসায়ি: (৯০৭)ইব্‌ন খুজাইমাহ: (১/২৪৯)হাদিস নং: (৪৯৫)আলবানী সহিহ নাসায়িতে”: (১/১৯৭) হাদিসটি সহিহ বলেছেন।
[40] লেখক বলেন : আমি আব্দুল আযিয ইব্‌ন বাজ রহ.কে বুলুগুল মারাম” গ্রন্থের (২৯৭-৩০০) নং হাদিসের ব্যাখ্যা প্রদানের সময় বলতে শোনেছি: বিসমিল্লাহ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আয়াতএটা ফাতেহা কিংবা অন্য কোন সূরার অংশ নয়দুই সূরার মাঝখাকে পৃথক করার জন্য আল্লাহ এ সূরা আয়াত করেছেনতবে এটা সূরা নামলের একটি আয়াত। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত। আর সূরা ফাতেহার সপ্তম আয়াত হচ্ছে: ﴿غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ ٧
[41] বুখারি: (৭৫৬)মুসলিম: (৩৯৪)
[42] আবু দাউদ: (৮২৩)তিরমিযি: (৩১১)আহমদ: (১/৩২২)ইব্‌ন হিব্বান: (৩/১৩৭)হাফেয ইব্‌ন হাজার তালখিসুল হাবির’ (১/২৩১) গ্রন্থে বলেন: এ হাদিসটি আবু দাউদদারা কুতনিতিরমিযিইব্‌ন হিব্বানহাকেম ও বায়হাকি সহিহ বলেছেন
[43] আমহদ: (৫/৪১০)ইব্‌ন হাজার তালখিুসুল হাবির’: (১/২৩১) গ্রন্থে বলেন: এ হাদিসের সনদ হাসান
[44] বুখারি: (৭৮৩)
[45] দারা কুতনি: (১/৩১১)হাকেম ফিল মুস্তাদরাক: (১/২২৩)তিনি বলেন: এ হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের র্শত মোতাবেক সহিহইমাম জাহাবি তার সমর্থন করেছেন। ইমাম বায়হাকি হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন: হাসান ও সহিহ। বায়হাকি: (২/৩২)
[46] বুখারি: (৭৮০)মুসলিম: (৪১০)
[47] বুখারি: (৭৮২)মুসলিম: (৪১০)
[48] আহমদ: (৪/৩৫৩৩৫৬৩৮২) আবু দাউদ: (৮৩২)নাসায়ি: (৯২৪)ইব্‌ন হিব্বান: (১৮০৫-১৮০৭)তিনি হাদিসটি সহিহ বলেছেন। দারাকুতনি: (১/৩১৩)তিনি হাদিসটি সহিহ বলেছেন। হাকেম: (১/২৪১)তিনি হাদিসটি সহিহ বলেছেনইমাম যাহাবি তার সমর্থন করেছেন।
[49] বুখারি: (৭৫৯)মুসলিম: (৪৫১)
[50] বুখারি: (৭৬২)
[51] মুসলিম: (৪৫২)আহমদ: (৩/৮৫)বন্ধনীর অংশ মুসনাদে আহমদ থেকে নেয়া: (৩/৮৫)
[52] দেখুন: নাইলুল আওতার: (১/৮০২)
[53] সূরা ক্বাফ বা হুজুরাত থেকে সূরা নাস পর্যন্ত সূরাগুলোকে মুফাস্‌সাল বলে। সম্পাদক
[54] নাসায়ি: (৯৮৩)আহমদ: (২/৩২৯)বুলুগুল মারাম ও ফাতহুল বারিতে এ সনদটি ইব্‌ন হাজার সহিহ বলেছেন। দেখুন: নাইলুল আওতার: (১/৮১৩)ইমাম ইব্‌ন বাজও এর সনদটি সহিহ বলেছেনরওজুল মুরবি: (২/৩৪)সহিহ সুনানে নাসায়িতে আলবানী হাদিসটি সহিহ বলেছেন: (১/২১২)হাদিস নং: (৯৩৯)
[55] মুসলিম: (৪৫৪)
[56] বুখারি: (৫৪৭)মুসলিম: (৬৪৭)
[57] মুফাসসাল হচ্ছে সূরা কাফ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত। তিওয়ালে মুফাসসাল হচ্ছে সূরা কাফ থেকে সূরা নাবা পর্যন্তআওসাত হচ্ছে নাবা থেকে দোহা পর্যন্ততারপর থেকে শেষ পর্যন্ত কিসার। দেখুন: হাশিয়াহ রওজুল মুরবি লি ইব্‌ন কাসেম: (২/৩৪)তাফসিরে ইব্‌ন কাসিরতিনি বলেন: বিশুদ্ধ মতে এটাই মুফাসসালের আরম্ভকেউ বলেছেন সূরা হুজুরাত: (৪/২২১)
[58] নাসায়ি: (৯৮৩)আহমদ: (২/৩২৯)
[59] এ কথা আমি শায়খ ইব্‌ন বাযের মুখে রওজুল মুরবির ব্যাখ্যার সময় বলতে শোনেছি: (২/৩৪)
[60] যাদুল মায়াদ: (১/২০৯)
[61] বিভিন্ন সালাতে পঠিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতক কিরাত এখানে আমরা উল্লেখ করছি:
এক. ফজরের সালাতে তিনি পড়েছেন: সূরা মুরসালাতবুখারি: (৭৬৩)মুসলিম: (৪৬২)সূরা আরাফবুখারি: (৭৬৪)সূরা তুরবুখারি: (৭৬৫)মুসলিম: (৪৬৩)সূরা দুখাননাসায়ি: (৯৮৮)কিসারে মুফাস্‌সালনাসায়ি: (৯৮৩)আলবানী বলেছেনইমাম তাবরানি তার কাবির’ গ্রন্থে একটি সহিহ সনদে উল্লেখ করেছেন যেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের দুরাকাতে সূরা আনফাল পড়েছেন। সিফাতুস সালাত: (১১৫)
দুই. এশার সালাতে তিনি পড়েছেন: সূরা ইনশিকাকবুখারি: (৭৬৬)সূরা আত্-তিনবুখারি: (৭৬৭)মুসলিম: (৪৬৪)নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুয়াজকে এশার সালাতে পড়ার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সূরা আলাসূরা লাইলসূরা শামসসূরা দোহা ও অনুরূপ সূরাসমূহমুসলিম: (৪৬৫)
তিন. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের দুই রাকাতে অথবা এক রাকাতে ষাট থেকে একশত আয়াত পর্যন্ত পড়তেনবুখারি: (৫৪৭)মুসলিম: (৬৪৭)সূরা মুমিনুন পড়েছেনবুখারি কিতাবুল আযানমুসলিম: (৪৫৫)সূরা কাফমুসলিম: (৪৫৭)সূরা তাকবিরমুসলিম: (৪৫৬)সূরা রূমআহমদ: (৩/৪৭২)নাসায়ি: (২/১৫৬)সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়েছেননাসায়ি: (৯৫২)বিদায় হজে তাওয়াফে বিদায় তিনি ফজরের সালাতে সূরা তুর পড়েছেনবুখারি। সূরা ওয়াকিয়া ও অনুরূপ সূরা পাঠ করেছেনসহিহ ইব্‌ন খুজাইমাহ: (১/২৬৫)জুমার দিন ফজরের সালাতে সূরা আলিফ লাম মিম সাজদাহ ও সূরা দাহার পড়তেনবুখারি: (৮৯১)মুসলিম: (৮৭৯)
চার. জোহরের সালাতে তিনি পড়তেনসূরা লাইলমুসলিম: (৪৫৯)সূরা আলামুসলিম: (৪৬০)সূরা তারেকসূরা বুরুজ ও অনুরূপ সূরাআবু দাউদ: (৮০৫)তিরমিযি: (৩০৭)নাসায়ি: (২/১৬৬)জুমার সালাতে সূরা জুমা ও সূরা মুনাফিকুন পড়তেনমুসলিম: (৮৭৯)অথবা সূরা আলা ও গাশিয়াহমুসলিম: (৮৭৮)অথবা সূরা জুমা ও গাশিয়াহমুসলিম: (৮৭৮)
পাঁচ. আসরের সালাতে তিনি পড়তেনসূরা তারেকসূরা বুরুজ ও অনুরূপ সূরাআবু দাউদ: (৮০৫)তিরমিজি: (৩০৭)নাসায়ি: (৯৭৯)
ছয়. ঈদের সালাতসমূহে তিনি পড়তেনসূরা কাফ ও সূরা কামারমুসলিম: (৮৯১)অথবা সূরা আলা ও গাশিয়াহমুসলিম: (৮৭৮)এ হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতএতদ সত্বেও তিনি হালকা সালাত আয়াদের নির্দেশ দিয়েছেনকারণ মুসল্লিদের মাঝে ছোটবড়দুর্বলঅসুস্থ ও ব্যস্ত লোক রয়েছে। মুসলিম: (৪৬৬), “তবে যখন একাকি সালাত পড়বেতখন যেভাবে ইচ্ছা পড়বে। মুসলিম: (৪৬৭)নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমি সালাতে থেকে তা লম্বা করতে ইচ্ছা করিকিন্তু বাচ্চার কান্না শোনে তার মায়ের কষ্টের কথা মনে করে হালকা করে ফেলি। মুসলিম: (৪৭০)হালকা করা একটি তুলনামূলক বিষয়এর পরিমাপ করতে হবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লামের কর্ম থেকেইমুক্তাদিদের প্রবৃত্তির দিকে লক্ষ করে নয়তার আদর্শই এ ব্যাপারে ফয়সালাকারীযেমন নাসায়িতে ইব্‌ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হালকা সালাত আদায়ের নির্দেশ দিতেনতিনি আমাদের সাথে সূরা সাফফাত দ্বারা ইমামতি করতেন। নাসায়ি: (২/৯৫)হাদিস নং: (৮২৬)ইব্‌ন কাইয়ূম রহ. বলেন: সূরা সাফফাত পড়া হালকা সালাতের অন্তর্ভু্তযে হালকা সালাত তাকে পড়তে নির্দেশ দেয়া হয়েছেআল্লাহ ভাল জানেনযাদুল মা‘আদ: (১/২১৪), “তিনি প্রত্যেক সালাতের প্রথম দুরাকাত লম্বা করতেন ও শেষের দুরাকাত ছোট করতেন। বুখারি: (৭৭০)মুসলিম: (৪৫৩)
[62] আবু দাউদ: (৭৭৮)তিরমি: (২৫১)তিনি হাদিসটি হাসান বলেছেন। আহমদ: (৫/২৩)ইমাম তিরমিযি বলেন: মুহাম্মদ বলেছেন: আলি ইব্‌ন আব্দুল্লাহ বলেছে: সামুরা থেকে বর্ণিত হাসানের হাদিস সহিহহাসান থেকে শ্রবণ করেছে। (/৩৪২)
[63] সূরা হাজ: (৭৭)
[64] বুখারি: (৭৫৭)মুসলিম: (৩৯৭)
[65] বুখারি: (৭৮৯)মুসলিম: (৩৯২)
[66] বুখারি: (৭৮৫)মুসলিম: (৩৯২)
[67] বুখারি: (৭৩৫)মুসলিম: (৩৯০)
[68] বুখারি: (৭৩৭)মুসলিম: (৩৯১)
[69] মুসলিম: (৪৯৮)
[70] বুখারি: (৮২৮)বন্ধরি অংশ আবু দাউদ: (৭৩০ ও ৭৩১) থেকে সংগৃহিত। আলবানী হাদিসটি সহিহ বলেছেন: সহিহ আবু দাউদ: (১/১৪১)
[71] আবু দাউদ: (৭৩৪)সহিহ আবু দাউদ লিল আলবানী: (১/১৪১)তিরমিজি: (২৬০)সহিহ সুনানে তিরমিজি লিল আলবানী: (১/৮৩)
[72] আবু দাউদ: (৮৫৯)সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (৭৬৫), (১/১৬২)
[73] সুনানে ইব্‌ন মাজাহ: (৮৭২)মাজমাউ‘য যাওয়াদে: (২/১২৩)
[74] বুখারি: (৭৯১), (৩৮৯), (৮০৮),
[75] বুখারি: (৭৯২), (৮২০), (৮০১), (৮২০)মুসলিম: (৪৭১)
[76] মুসলিম: (৭৭২)আবু দাউদ: (৮৭১)
[77] ইব্‌ন মাজাহ: (৮৮৮)সিফাতুস সালাত: (১৩৬)সহিহ ইব্‌ন মাজাহ: (১/১৪৭)
[78] বুখারি: (৭৯৪), (৮১৭)মুসলিম: (৪৮৪)
[79] মুসলিম: (৪৮৭)
[80] আবু দাউদ: (৮৮৩)নাসায়ি: (১০৪৯)সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/১৬৬)
[81] মুসলিম: (৭৭১)
[82] মুসলিম: (৪৭৯)
[83] বুখারি: (৭৯৫)
[84] বুখারি: (৭৯৬)মুসলিম: (৪০৯)
[85] বুখারি: (৭৮৯)মুসলিম: (৩৯২)
[86] বুখারি: (৭৮৯)মুসলিম: (৩৯২)
[87] বুখারি: (৭৯৬)মুসলিম: (৪০৯)
[88] বুখারি: (৭৯৬), মুসলিম: (৪০৯)
[89] দেখুন হাদিসে রিফাআবুখারি: (৭৯৯)
[90] দেখুন হাদিসে আবু সাইদ খুদরিমুসলিম: (৪৭৭) ও (৪৭৮)
[91] নাসায়ি: (৮৮৭)
[92] বুখারি: (৮২১)মুসলিম: (৪৭২)
[93] সূরা হাজ: (৭৭)
[94] বুখারি: (৭৫৭)
[95] বুখারি: (৭৮৯)মুসলিম: (৩৯২)
[96] আবু দাউদ: (৮৩৮), (৮৩৯)তিরিমিযি: (২৬৮)নাসায়ি: (১০৮৯)সুনানে ইব্‌ন মাজাহ: (৮৮২)ইব্‌ন খুযাইমা: (২৬২) প্রমুখগণ।
[97] বুখারি: (৮২৮)
[98] সহিহ ইব্‌ন খুযাইমা: (৬৪২)
[99] সহিহ ইব্‌ন খুযাইমা: (৬৪৩)
[100] সহিহ ইব্‌ন খুযাইমা: (৬৫১)আবু দাউদ: (৭৩০)
[101] বুখারি: (৮১২)মুসলিম: (৪৯০)
[102] বুখারি: (৮০৭)মুসলিম: (৪৯৫)
[103] আবু দাউদ: (৭৩৫)
[104] আবু দাউদ: (৭৩৪)তিরমিযি: (২৭০)তিনি হাদিসটি হাসান ও সহিহ বলেছেন। সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/২৪২)
[105] নাসায়ি: (৮৮৯)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/১৯৪)
[106] তিরমিযি: (২৭১)সহিহ সুনানে তিরমিযি: (১/৮৬)
[107] বুখারি: (৮২২)মুসলিম: (৪৯৩)
[108] মুসিলম: (৪৯৪)
[109] সহিহ ইব্‌ন খুজাইমা: (৬৫৪)বায়হাকি: (২/১১৬)
[110] মুসলিম: (৪৮৬)
[111] বুখারি: (৭৯৪)মুসলিম: (৪৮৪)
[112] মুসলিম: (৪৮৭)
[113] আবু দাউদ: (৮৮৩)নাসায়ি: (১০৪৯)
[114] মুসলিম: (৭৭১)
[115] মুসলিম: (৪৮৬)
[116] মুসলিম: (৪৮৩)
[117] মুসলিম: (৪৭৯)
[118] মুসলিম: (৪৭৯)
[119] বুখারি: (৭৮৯), (৮০৩)মুসলিম: (৩৯৬)
[120] মুসলিম: (৪৯৮)
[121] মুসলিম: ১১৩-(৫৭৯)
[122] মুসলিম: ১১৪-(৫৮০)
[123] আমাদের শায়খ ইব্‌ন বায রহ. বলেছেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিততিনি দুহাত রানের উপর রেখেছেনহাটুর উপর রেখেছেন এবং রানের উপর রেখে আঙুলগুলো হাটুর উপর রেখেছেন। (/৮/১৪১৯হি.) শনিবারফজরের সালাতে বড় মসজিদে এ ব্যাখ্যা শ্রবণ করি।
[124] নাসায়ি: (১২৬৯)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/২৭২)
[125] নাসায়ি: (১২৬৪)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/২৭০)
[126] আবু দাউদ: (৭২৬)নাসায়ি: (১২৬৫)আহমদ: (৪/৩১৮)ইব্‌ন হিব্বান: (৪৮৫)ইব্‌ন খুযাইমা: (১/৩৫৪)সুনানে আবু দাউদ: (১/১৪০) প্রমূখগণ।
[127] আল্লামা ইব্‌ন উসাইমিন রহ. বলেছেন: সহিহদুর্বল কিংবা হাসান পর্যায়ের একটি হাদিসও নেইযার দ্বারা প্রমাণ হয় যেডান হাত ডান রানের উপর বিছানো থাকবে। বরং বর্ণিত আছে যেমুষ্টি বানাবে: কনিষ্ঠা ও অনামিকা দ্বারা মুষ্ঠি বানাবে এবং বৃদ্ধা ও মধ্যমা আঙুল দ্বারা হালকা বানাবে...যখন সালাতে বসবে, (মুসলিম:৫৮০)কোন বর্ণনা আছে যখন তাশাহুদে বসবে। (মুসলিম:৫৮০)উভয় হাদিসই সহিহ মুসলিমে বিদ্যমান। এর দ্বারা বুঝা যায়সকল বসাতেই অনুরূপ হালকা বানাবে। সংক্ষিপ্ত। শারহুল মুমতি: (৩/১৭৮)
[128] আবু দাউদ: (৮৭৪)ইবন মাজাহ: (৮৯৭)সহিহ ইব্‌ন মাজাহ: (১/১৪৮)
[129] সুনানে আবু দাউদ: (৮৫০)
[130] ইব্‌ন মাজাহ: (৮৯৭)সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/১৬০)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/১৪৮)
[131] বুখারি: (৭৯২)মুসলিম: (৪৭১)
[132] বুখারি: (৭৯৩)
[133] বুখারি: (৭৮৯)মুসলিম: (৩৯৬)
[134] বুখারি: (৬২৫১)
[135] বুখারি: (৭৮৯)মুসলিম: (৩৯৬)
[136] বুখারি: (৮২৩)
[137] বুখারি: (৬৭৭)
[138] বুখারি: (৬২৫)
[139] ইমাম আব্দুল আজিয ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইব্‌ন বায রহ.- বুলুগুল মারাম’ এর (৩২৩) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: এ ব্যাপারে লোকেরা বিস্তর মত বিরোধ করেছেকেউ বলেছেন এটা তার শরীর ভারী যাওয়ার অবস্থাকেউ বলেছেন অসুস্থার অবস্থাআবার কেউ বলেছেন বরং এটা সুন্নত। কারণ হাদিস সহিহযার থেকে মুখ ফিরানোর কোন কারণ নেইএটাই স্পষ্ট। কারণ নীতি এটাই যেরাসূলের সালাতের যে অবস্থা বর্ণনা করা হবে সেটাই সালাতের সুন্নততা কোন শর্তের সাথে নির্দিষ্ট করা যাবে নাঅতএব এটা শরীর ভারী হওয়ার অবস্থা বা অসুস্থতার অবস্থা বলা ঠিক নয়এর জন্য দলিলের প্রয়োজন। জালসায়ে ইস্তেরাহার আরেকটি দলিল হচ্ছে আহমদ ও আবু দাউদ প্রমুখদের জাইয়্যেদ সনদে বর্ণিত হাদিস। আবু দাউদ থেকে বর্ণিততিনি কোন একদিন দশজন সাহাবির সামনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের পদ্ধতি বর্ণনা করেনতাতে জালসায়ে ইস্তেরাহাও উল্লেখ করেনসবাই তাকে সমর্থন জানান। অতএব আবু হুমাইদকে এগারতম গণনা করলে বারোজন সাহাবি থেকে এটা বর্ণিতআর যদি তাকে দশম গণনা করা হয়তাহলে এগারজন সাহাবি থেকে বর্ণিতআর মালেক ইব্‌ন হুয়াইরিসের হাদিস তো আছেই। জালসায়ে ইস্তেরাহা খুবই সংক্ষেপ: দুই সেজদার মাঝখানে বসার ন্যায়এতে কোন জিকির ও দোয়া নেই। লেখক বলল: এ হাদিসটি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও বর্ণিত: বুখারি: (৬২৫)
[140] আবু দাউদ: (৭৩০)সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/১৪০)
[141] আবু দাউদ: (৮৩৮)তিরমিযি: (২৬৮)নাসায়ি: (১০৮৯)ইব্‌ন মাজাহ: (৮৮২)
[142] বাখারি: (৮২৪)
[143] বুখারি: (৭৯৩)মুসলিম: (৩৯৭)
[144] মুসলিম: (৫৯৯)
[145] মুসলিম: (৫৯৯)
[146] মুসলিম: (৪৫১)
[147] বুখারি: (৭৭০)মুসলিম: (৪৫৩)
[148] হাশিয়া রওজুল মুরবি: (২/৬২)
[149] সূরা নাহল: (৯৮)
[150] যাদুল মায়াদ: (১/২৪২)
[151] হাশিয়া রওজুল মুরবি: (২/৬২)
[152] বুখারি: (৮২৮)
[153] যাদুল মা‘য়াদ: (১/২৪২)
[154] মুসলিম: ১৬৬-(৫৮০) ও ১১৪-(৫৮০)
[155] ইব্‌ন মাজাহ: (৯১২)
[156] মুসলিম: ১১৫-(৫৮০)
[157] নাসায়ি: (১২৭৫)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/২৭২)
[158] নাসায়ি: (১৬৬০) সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/২৫০)
[159] নাসায়ি: (৮৯০)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/১৯৪)
[160] নাসায়ি: (১২৭০)আবু দাউদ: (৯৮৯)
[161] বায়হাকি: (২/১৩২)
[162] তিরমিযি: (৩৫৫৭)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/২৭২)
[163] নাইলুল আওতার: (২/৬৮)
[164] বুখারি: (৮৩১)মুসলিম: (৪০২)
[165] মুসল্লি চাইলে অন্যান্য তাশাহুদও পড়তে পারেযা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
[166] বুখারি: (৩৩৭০)
[167] এ ছাড়াও আরো দরুদ বর্ণিত আছে।
[168] বুখারি: (১৩৭৭)মুসলিম: (৫৮৮)
[169] বুখারি: (৮৩২)মুসলিম: (৫৮৯)
[170] বুখারি: (৮২৪)মুসলিম: (২৭০৫)
[171] মুসলিম: ৪৮-(২৭০৫)
[172] মুসলিম: (৭৭১)
[173] বুখারি: (২৮২২), (৬৩৬৫), (৬৩৭৪), (৬৩৯০)
[174] ইব্‌ন মাজাহ: (৩৮৪৭)সহিহ সুনানে ইব্‌ন মাজাহ: (২/৩২৮)আবু দাউদ: (৭৯২)
[175] নাসায়ি: (১৩০১)আবু দাউদ: (৯৮৫)আহমদ: (৪/৩৩৮)
[176] আবু দাউদ: (১৪৯৫)ইব্‌ন মাজাহ: (৩৮৫৮)সহিহ আবু দাউদ: (১/২৭৯)আহমদ: (৩/১৫৮), (৩/২৪২),
[177] আবু দাউদ: (১৪৯৩)তিরমিযি: (৩৪৭৫)ইব্‌ন মাজাহ: (৩৮৫৭)
[178] বুখারি: (৮৩১)মুসলিম: (৪০২)
[179] সিফাতুস সালাত: ইমাম ইব্‌ন বায: (১৮)
[180] মুসলিম: (৪৩১)
[181] মুসলিম: (৫৮২)
[182] বুখারি: (৮৫২)মুসলিম: (৭০৭) ও (৭০৮)
[183] সুনানে আবু দাউদ: (৮৩৮)তিরমিযি: (২৬৮)নাসায়ি: (১০৮৯)ইব্‌ন মাজাহ: (৮৮২)
[184] বুখারি: (৭৩৯)মুসলিম: (৩৯০)
[185] বুখারি: (৮২৮)আবু দাউদ: (৭৩০)
[186] নাসায়ি: (৮৮৭)
[187] মুসলিম: (৪৫২)
[188] বুখারি: (৮২৪)মুসলিম: (৩৯৭)
[189] বুখারি: (৮২৮)
[190] মুসলিম: (৫৯১)
[191] মুসলিম: (৫৯২)
[192] বুখারি: (৮৪৫)
[193] বুখারি: (৬৪৭৩) মুসলিম: (৫৯৩)
[194] বন্ধনির মাঝখানের অংশ মুজামে তাবরানি: (২০/৩৯২)হাদিস নং (৯২৬) থেকে নেয়া,
[195] বন্ধনির মাঝখানের অংশ মুসনাদে আবদ ইব্‌ন হুমাইদ: (১৫০-১৫১) হাদিস নং: (৩৯১) থেকে নেয়া।
[196] বুখারি: (৬৩৩০)মুসলিম: (৫৬৩)
[197] মুসলিম: (৫৯৪)
[198] মুসলিম: (৫৯৭)
[199] দেখুন: শারহুল মুমতি: (৩/৩৭)ফতোয়া শায়খুল ইসলাম ইব্‌ন তাইমিয়া: (২২/৩৫-৩৭)
[200] মুসলিম: (৫৯৭)
[201] মুসলিম: (৫৯৬)
[202] বুখারি: (৮৪৩)হাদিস নং: (৫৯৫)মুসলিম: (৫৯৫)
[203] এটা এ কারণে যেপ্রত্যেক নেকি দশগুন বৃদ্ধি পাবে।
[204] নাসায়ি: (১৩৪৮)ইব্‌ন মাজাহ: (৯২৬)আবু দাউদ: (৫০৬৫)তিরমিযি: (৩৪১০)আহমদ: (২/৫০২)সহিহ সুনানে নাসায়ি: (১/২৯০)সহিহ ইব্‌ন মাজাহ: (১/১৫২)হাকেম হাদিসটি সহিহ বলেছেনইমাম জাহাবি তার সমর্থন করেছেনহাকেম: (১/২৫৫)
[205] বুখারি: (৬৩২৯)
[206] মুসলিম: ৪৩-(৫৯৫)
[207] নাসায়ি: (১৩৫০) ও (১৩৫১)তিরমিজি: (৩৪১৩)ইব্‌ন খুজাইমাহ: (৫৭২)আহমদ: (৫/১৮৪)দারামি: (১/৩১২)তাবরানিহাদিস নং: (৪৮৯৮)ইব্‌ন হিব্বানহাদিস নং: (২০১৭)হাকেম: (১/২৫৩)তিনি হাদিসটি সহিহ বলেছেনইমান জাহাবি তার সমর্থন করেছেন
[208] নাসায়ি ফি আমালিল ইয়াওম ও লাইলাহ: (১০০)ইব্‌ন সুন্নি ফি আমালিল ইয়াওম ও লাইলা: (১২১)তাবরানি ফিল কাবির: (১/১১৪)হাদিস নং: (৭৫৩২)
[209] আবু দাউদ: (১৫২৩)নাসায়ি: (১৩৩৬)তিরমিযি: (২৯০৩)সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/২৮৪)সহিহ সুনানে তিরমিযি: (২/৮)
[210] বন্ধনির অংশের জন্য দেখুন কাশফুল আসতার: (৪/২৫)হাদিস নং: (৩১০৬)
[211] দেখুন: আবু যর থেকে বর্ণিত হাদিসতিরমিযি: (৩৪৭৪)তিনি হাদিসটি হাসানগরিব ও সহিহ বলেছেন। আহমদ: (৫/৪২০)। দেখুন: আব্দুর রহমান ইব্‌ন গুনম আশআরি থেকে বর্ণিত হাদিসআহমদ: (৪/২২৭)দেখুন: আবু আইয়ূব থেকে বর্ণিত হাদিসআহমদ: (৫/৪১৪)সহিহ ইব্‌ন হিব্বান: (২০২৩)দেখুন: আবু আইয়াশ থেকে বর্ণিত হাদিসআহমদ: (৪/৬০)আবু দাউদ: (৫০৭৭)ইব্‌ন মাজাহ: (৩৮৬৭)দেখুন: মুয়াজ থেকে বর্ণিত হাদিসনাসায়ি ফি আমালিল ইয়াওম ও লাইলাহ: (১২৬)ইব্‌ন সুন্নি ফি আমালিল ইয়াওম ও লাইলাহ: (১৩৯)তাবরানি: (৭০৫)দেখুন: উমারা ইব্‌ন শাবিব থেকে বর্ণিত হাদিসনাসায়ি ফি আমালিল ইয়াওম ও লাইলা: (৫৭৭)তিরমিজি: (৩৫৩৪)দেখুন: আবু উমামাহ থেকে বর্ণিত হাদিস সম্পর্কে মুনজিরি বলেন, “তাবরানি তার আওসাত গ্রন্থে সুন্দর সনদে এটা বর্ণনা করেছেন”, তারগিব ও তারহিব: (১/৩৭৫) হায়সামি বলেন: (এ হাদিসটি তাবরানি তার আওসাত ও কাবির গ্রন্থে বর্ণনা করেনআওসাত গ্রন্থের বর্ণনাকারী সকলেই নির্ভরযোগ্য। মাজমাউ‘য যাওয়ায়েদ : (১০/১১১)দেখুন: আবু দারদা থেকে বর্ণিত হাদিসহায়সামি তা মাজমাউ‘য যাওয়ায়েদ গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেনএ হাদিস তাবরানি তার কাবির ও আওসাত গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। মাজমাউয যাওয়ায়েদ: (১০/১১১)
[212] ইব্‌ন মাজাহ: (৯২৫)আহমদ: (৬/৩০৫)সহিহ সুনানে ইব্‌ন মাজাহ: (১/১৫২)দেখুন: মাজমাউয যাওয়ায়েদ: (১০/১১১)
[213] মুসলিম: (৭০৯)
[214] বুখারি: (৮৪২)মুসলিম: (৫৮৩)
[215] বুখারি: (৮৪১)মুসলিম: (৫৮৩)
[216] ফাতহুল বারি: (২/৩২৬)
[217] মুসলিম: (৫৯৫)
[218] বুখারি: (১১৮২)
[219] মুসলিম: (৭২৮)
[220] তিরমিযি: (৪১৫)
[221] বুখারি: (১১৮)মুসলিম: (৭২৯)
[222] বুলুগুল মারামের (৩৭৪) নং হাদিসের ব্যাখ্যার সময় তার মুখে এ কথাগুলো আমি শ্রবণ করি।
[223] আহমদ: (৬/৩২৬)আবু দাউদ: (১২৬৯)তিরমিজি: (৪২৭)নাসায়ি: (১৮১৪)ইব্‌ন মাজাহ: (১১৬০)সহিহ সুনানে ইব্‌ন মাজাহ: (১/১৯১)। আমি আল্লামা ইব্‌ন বাজ রহ. কে বুলুগুল মারামের (৩৮১) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: এ হাদিসের সনদ খুব সুন্দরতবে ইব্‌ন ওমর ও আয়েশার হাদিসে যা রয়েছেতার উপর রাসূলের নিয়মিত আমল ছিল। আমি বলি: আমি তাকে জীবনের শেষ বয়সেও দেখেছিতিনি বসে বসে জোহরের আগে চার রাকাত ও জোহরের পরে চার রাকাত পড়তেনআল্লাহ তার উপর রহম করুন।
[224] আহমাদ: (২/১১৭)আবু দাউদ: (১২৭১)তিরমিযি: (৪৩০)সহিহ ইব্‌ন খুজাইমা: (১১৯৩)সহিহ সুনানে আবু দাউদ: (১/২৩৭)। আমি আল্লাহ ইব্‌ন বাজ রহ. কে বলতে বুলুগুল মারামের (৩৮২) নং হাদিসের ব্যাখ্যায় বলতে শোনেছি: এ হাদিসের সনদ গ্রহণ করাতে কোন সমস্যা নেইএ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যেআসরের পূর্বে চার রাকাত পড়া বৈধ ও সুন্নততবে এটা সুন্নতে রাতেব নয়কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো এটা নিয়মতি পড়েননি। আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আছেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের পূর্বে দুরাকাত পড়তেনএর দ্বারা প্রমাণিত হয় যেআসরের পূর্বে দুরাকাত অথবা চার রাকাত পড়া মুসলিমদের জন্য মুস্তাহাব। 

No comments:

Post a Comment